রোকেয়ার বাবা একজন বহুভাষী পণ্ডিত ছিলেন। তবে মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে তিনি বরাবরই ছিলেন রক্ষণশীল।
Published : 09 Dec 2024, 11:00 AM
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী ডিসেম্বরের ৯ তারিখ। তার অবদানকে স্মরণ করতে দিনটি পালিত হয় বেগম রোকেয়া দিবস হিসেবে।
নারীর অধিকার আন্দোলনের অন্যতম এই পথিকৃৎ জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে। বাঙালি নারীর মুক্তির দিশারী হয়ে উঠা বেগম রোকেয়া বেঁচে ছিলেন মাত্র ৫২ বছর। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর কলকাতায় তার মৃত্যু হয়।
বেগম রোকেয়ার আসল নাম ছিল রোকেয়া খাতুন। বৈবাহিক জীবন শুরু করার পর তিনি বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নামে পরিচিত হন।
বেগম রোকেয়ার পিতা জহির উদ্দিন আবু আলী হায়দার সাবের একজন বহুভাষী পণ্ডিত ছিলেন। তবে মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে তিনি বরাবরই রক্ষণশীল ছিলেন।
ফলে তৎকালীন মুসলিম সমাজিক ব্যবস্থা অনুসারে রোকেয়া ও তার বোনেরা বাইরে পড়াশোনার সুযোগ পায়নি। ঘরে তাদের আরবি ও উর্দু ভাষা শেখানো হয়। রোকেয়ার বড় ভাই ইব্রাহিম সাবের আধুনিক চিন্তাশীল একজন মানুষ ছিলেন। তিনি রোকেয়াকে গোপনে বাংলা ও ইংরেজি ভাষার পাঠ দেন।
বেগম রোকেয়া ১৮৯৮ সালে বিহারের ভাগলপুরের খান বাহাদুর সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পেশায় সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। স্বামীর উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় জ্ঞান অর্জনের পথ অধিকতর সুগম হয় বেগম রোকেয়ার।
১৯০২ সালে 'পিপাসা' নামে একটি বাংলা গল্প লিখে সাহিত্য জগতে পা রাখেন তিনি। 'মতিচুর' ও 'অবরোধবাসিনী' বেগম রোকেয়ার বিখ্যাত গ্রন্থ।
১৯০৯ সালে তার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন মারা যাওয়ার পাঁচ মাস পর ভাগলপুরে মেয়েদের জন্য 'সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল' নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন রোকেয়া।
মাত্র ৮ জন ছাত্রী নিয়ে শুরু হয় সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের যাত্রা। মেয়েদের শিক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে রোকেয়া ঘরে ঘরে গিয়ে তাদের বোঝাতেন। চার বছরে ওই স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৪ জনে। ১৯৩০ সালে এটি মাধ্যমিক স্কুলে পরিণত হয়।
১৯১৬ সালে বেগম রোকেয়া প্রতিষ্ঠা করেন মুসলিম বাঙালি নারীদের সংগঠন 'আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম'।
২০০৪ সালে বিবিসি বাংলার 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি' জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন বেগম রোকেয়া।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৩। জেলা: ঢাকা।