প্রতি ১০০ জন শিশুর মধ্যে ৪১ জন জানিয়েছে, তাদের খেলার সময় বাবা-মা বা প্রতিবেশীরা তাদের বাধা দেন।
Published : 12 Jun 2025, 12:25 PM
খেলাধুলা মানে শুধু শারীরিক কসরত নয়, এটি সহনশীলতা, সৃজনশীলতা ও চিন্তাশক্তি বিকাশেরও একটি কার্যকর মাধ্যম।
সব বয়সের মানুষের জন্য খেলাধুলা উপকারী হলেও শিশুকালে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক খেলা দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খেলাধুলা শিশুদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এটি আত্মনিয়ন্ত্রণ, মানসিক আঘাত কাটিয়ে ওঠা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে।
একই সঙ্গে এটি শিশুর শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আবেগগত দক্ষতার বিকাশে ভূমিকা রাখে। যা আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, প্রতি ১০০ জন শিশুর মধ্যে ৭১ জন মনে করে খেলাধুলা তাদের মানসিকভাবে উৎফুল্ল রাখে। শতকরা ৫৮ জন শিশুর মতে, খেলাধুলা তাদের নতুন বন্ধু বানাতে সাহায্য করে।
অথচ আজকের পৃথিবীতে অনেক শিশুই নিয়মিত খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গবেষণা বলছে, খেলাধুলার সুযোগ সীমিত হওয়ায় শিশুর সুস্থতা ও বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৬ কোটি শিশু শ্রমের সঙ্গে যুক্ত। এরা প্রায় সম্পূর্ণভাবে খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
জরিপ বলছে, প্রতি ১০০ জন শিশুর মধ্যে ৪১ জন জানিয়েছে, তাদের খেলার সময় বাবা-মা বা প্রতিবেশীরা তাদের বাধা দেন।
হতাশাজনক তথ্য হল, বর্তমানে প্রতি চারজন শিশুর মধ্যে মাত্র একজন নিয়মিতভাবে মাঠে খেলে। অথচ তাদের দাদা-নানার প্রজন্মে প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজনই নিয়মিত বাইরে খেলত।
শিশুদের খেলাধুলার গুরুত্ব তুলে ধরতে জাতিসংঘ ২০২৪ সাল থেকে ১১ জুনকে 'ইন্টারন্যাশনাল ডে অব প্লে' বা 'আন্তর্জাতিক খেলা দিবস' হিসেবে ঘোষণা করেছে।
এই বছর দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বজুড়ে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য— “চুজ প্লে – এভ্রি ডে”। অর্থাৎ, খেলাধুলার পক্ষে থাকি প্রতিদিন।
এই প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে জাতিসংঘ বলছে, পরিবার, স্কুল ও সরকার যেন এমন পরিবেশ গড়ে তোলে, যেখানে শিশুদের প্রতিদিন খেলাধুলা করার সুযোগ থাকবে। আর খেলাধুলাকে শিশুদের জীবনের অগ্রাধিকার হিসেবে দেখতে হবে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: ঢাকা।