১৯৬৯ সালে ছাত্র-জনতা তাকে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধি দেয়।
Published : 15 Aug 2025, 02:12 PM
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দিনটি ফিরে এসেছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ভোরে ঘাতকের বুলেটের আঘাতে মারা যান বঙ্গবন্ধু। শুধু তাই নয়, ঘাতকরা নির্বিচারে হত্যা করে তার স্ত্রী, ছেলে, পুত্রবধূসহ পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে। ঘাতকের বুলেট থেকে রেহাই পায়নি পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য শেখ রাসেলও।
শেখ মুজিবের দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় সে সময় প্রাণে বেঁচে যান।
এই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক। এ কথা জানা যায় সাহিত্যিক আবুল ফজলের ‘মৃত্যের আত্মহত্যা’ বই থেকে। গেল মাসে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার হিসেবে বইটি পেয়েছি।
সেখানে আরও বলা হয়েছে, একই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু হত্যার ঠিক দুই মাস ১৯ দিনের মাথায় কারা হেফাজতে হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া জাতীয় চার নেতাকে।
শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে ছাত্রলীগ গঠনের মাধ্যমে তিনি সক্রিয় হন রাজনীতিতে।
এরপর বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন ও ছেষট্টির ছয় দফা প্রণয়নে শেখ মুজিবকে দেখা যায় নেতৃত্বের ভূমিকায়।
পরে আগরতলা মামলায় প্রধান আসামি করা হলে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি কারামুক্ত হন। এরপর ছাত্র-জনতা তাকে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধি দেয়।
১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন শেখ মুজিব। সেই ডাকে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। নয় মাসের রক্তাক্ত সংগ্রামে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু দেশের প্রথম সরকারপ্রধান হিসেবে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে কাজ শুরু করেন। কিন্তু, চার বছর পর ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বদলে যায় বাংলাদেশের ইতিহাসের গতিপথ।
এই হত্যাকাণ্ডের পর খুনিদের রক্ষায় জারি করা হয় ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার শুরু করে।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫ অগাস্টে নিহতদের নানা আয়োজনে স্মরণ করা হত। শ্রদ্ধা নিবেদন করতেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস এবং এ দিনের সরকারি ছুটি বাতিল করে।
সরকার পতনের দিন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। এর ছয় মাস পর 'মুজিববাদের কবর রচনার’ ঘোষণা দিয়ে বাড়িটি ভেকু দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: ঢাকা।