ছাত্র জীবন থেকে বিতর্কের সঙ্গে যুক্ত এই শিক্ষকের মতে, যুক্তিবাদী সমাজ গঠনে বিতর্ক বড় ভূমিকা রাখে।
Published : 01 Dec 2024, 09:27 PM
বিতর্ক চর্চা একজন শিক্ষার্থীকে নানাভাবে উপকৃত করে বলে মনে করেন সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ ডিবেটিং ক্লাবের মডারেটর রিয়াজ হাসান। ছাত্র জীবন থেকে বিতর্কের সঙ্গে যুক্ত এই শিক্ষকের মতে, যুক্তিবাদী সমাজ গঠনে বিতর্ক বড় ভূমিকা রাখে। হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপচারিতায় বিতর্কের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন তিনি।
হ্যালো: আপনি বিতর্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন কীভাবে?
রিয়াজ হাসান: আমি ছাত্রজীবন থেকেই বিতর্কের সঙ্গে যুক্ত। কলেজে পড়ার সময় প্রথমবার বিতর্কে অংশ নিই। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর আরও বেশি সক্রিয়ভাবে বিতর্ক চর্চা শুরু করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় বিতর্ক সংগঠনের সদস্য ছিলাম। পাশাপাশি হল ও বিভাগের বিতর্ক সংগঠনে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছি।
হ্যালো: একজন শিক্ষার্থীর কেন সহশিক্ষামূলক কার্যক্রম হিসেবে বিতর্কে অংশগ্রহণ করা উচিত?
রিয়াজ হাসান: নিয়মিত পড়াশোনার বাইরেও শিক্ষামূলক কার্যক্রমগুলোকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করতে পারি কো-কারিকুলার এবং এক্সট্রা-কারিকুলার। বিতর্ক এমন একটি কো-কারিকুলার কার্যক্রম যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। কর্মজীবনে যেকোনো বিষয়ে সুস্পষ্ট ও আত্মবিশ্বাসী উপস্থাপনার জন্য বিতর্কের অভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া বিতর্ক শেখায় কীভাবে যুক্তি দিয়ে বিষয় বিশ্লেষণ করতে হয় এবং সমস্যাকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে হয়।
হ্যালো: বিতর্ক শিক্ষার্থীদের কী ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে?
রিয়াজ হাসান: আমরা চাই দেশের মানুষ যুক্তি দিয়ে সবকিছু বিচার করুক। ভালো-মন্দের পার্থক্য, করণীয়-অকরণীয়ের বিষয়ে তারা যেন যুক্তির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিতর্ক একজন শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন করার ক্ষমতা দেয় এবং নিজেদের অবস্থান দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করতে শেখায়। এই সাহস এবং যুক্তিবাদী মানসিকতা তৈরিতে বিতর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
হ্যালো: একজন নতুন বিতার্কিক কীভাবে শুরু করতে পারে এবং আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে পারে?
রিয়াজ হাসান: যারা বিতর্কে আগ্রহী, তাদের জন্য মূলত ইচ্ছেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিতর্ক শেখার জন্য কোনো নির্দিষ্ট প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। একজন নতুন বিতার্কিক বিতর্ক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে পারে। বিতর্কের মঞ্চটাই শেখার জায়গা।
হ্যালো: আপনার শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা থেকে সবচেয়ে প্রেরণাদায়ক মুহূর্ত কোনটি?
রিয়াজ হাসান: আমি প্রায় সাত বছর ধরে শিক্ষকতা করছি। শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকটি অর্জনই আমাকে প্রেরণা দেয়। তারা যখন কোনো বড় সাফল্য অর্জন করে, সেটা আমার নিজের সাফল্য বলেই মনে হয়। তাদের আনন্দই আমাদের কাজের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
হ্যালো: সম্প্রতি শিক্ষার্থীরা কিছু শিক্ষকের পদত্যাগে বাধ্য করেছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?
রিয়াজ হাসান: এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে, যা আসলে পুরো ব্যবস্থার ব্যর্থতাকে প্রকাশ করে। আমার মতে, শিক্ষক হিসেবে আমাদের ক্ষমতা কাঠামোর উদ্দেশ্যে নয়, বরং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করা উচিত। শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষা দিয়ে যুক্তিবাদী মানসিকতা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
হ্যালো: আপনার মূল্যবান সময়ের জন্য ধন্যবাদ, স্যার।
রিয়াজ হাসান: তোমাকেও ধন্যবাদ।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৩। জেলা: ঢাকা।