‘অনেকের মধ্যে টিকা নিয়ে ভয় কাজ করছিল বলে এগিয়ে আসেন আমাদের শিক্ষকরা।’
Published : 14 Oct 2025, 09:40 PM
টাইফয়েডের টিকা সম্পর্কে আমি প্রথম জানতে পারি স্কুল থেকে। কয়েকদিন আগে এক নোটিশে বলা হয়, আমাদের সবাইকে বিনামূল্যে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে। আর এ জন্য অন্য কোথাও যেতে হবে না, দেওয়া হবে স্কুলেই।
টিকা নেওয়ার জন্য শিক্ষকরা আমাদের অনলাইনে নিবন্ধন করতে বলেন। আমি সেদিন বাসায় ফিরে সঙ্গে সঙ্গেই নিবন্ধন সেরে ফেলি।
১০ অক্টোবর স্কুলে গিয়ে জানতে পারি দুদিন পরেই টিকা দেওয়া হবে। আমি আগ্রহ নিয়ে ১২ তারিখ স্কুলে যাই। গিয়ে দেখি আমার কিছু সহপাঠী বলাবলি করছে, এই টিকা নিলে মুখে বা শরীরে এলার্জি হতে পারে।
আমি তাদের কথার সঙ্গে একমত হইনি। বরং তাদের বুঝিয়ে বলি, প্রত্যেক ওষুধেরই কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। তবে তা খুবই সামান্য। একেকজনের ক্ষেত্রে তা একেকরকমের হতে পারে, আবার না-ও হতে পারে। সাধারণ জ্বরের ওষুধেও তো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে।
অনেকের মধ্যে টিকা নিয়ে ভয় কাজ করছিল বলে এগিয়ে আসেন আমাদের শিক্ষকরা। তারা সবাইকে বুঝিয়ে বলেন যে, টিকা গ্রহণে অনেক উপকার আছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তুলনায় টিকা নেওয়ার উপকারিতাই বেশি।
শিক্ষকদের কথায় ভরসা পেয়ে আমি টিকা গ্রহণ করি। যদিও শুরুর দিকে আমার মনেও একটু ভয় ছিল। তখন ভাবছিলাম, সবাইকে টিকা নিতে উৎসাহ দিয়েছি, অথচ এখন নিজে ভয় পাচ্ছি! এ সময় আমার বন্ধু আমাকে সাহস দেয়।
স্বাস্থ্যকর্মীরা এত দক্ষ ছিলেন যে, বুঝতেই পারিনি কখন টিকা নেওয়া শেষ হয়ে গেছে। তখন বুঝলাম আমাদের অনেক ভয়ই আসলে কল্পনামাত্র।
বাড়িতে ফেরার প্রায় দুই ঘণ্টা পর আমার হাতে হালকা ব্যথা শুরু হয়। আমি মাকে জানালে তিনি আমাকে প্যারাসিট্যামল জাতীয় একটি ওষুধ খেতে দেন। খানিক পরেই ব্যথা একদম সেরে যায়। এমনকি টিকা নেওয়া আমার বন্ধুরাও সবাই সুস্থ আছে।
এই অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে যে, সঠিক তথ্য জানা থাকলে ভয়কে জয় করা যায়। টিকা নিয়ে আমি আরও বেশি সুরক্ষিত বোধ করছি। আমার বিশ্বাস, সবাই মিলে টিকা গ্রহণ করলে আমরা শুধু নিজেদের নয়, পুরো সমাজকেও টাইফয়েডের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পারব।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: ঢাকা।