'এই ধোঁয়া শুধু বর্তমানের জন্য নয়, ভবিষ্যতের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।'
Published : 26 Jul 2025, 11:14 PM
ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ। এই ধোঁয়ার মধ্যে থাকা রাসায়নিক উপাদান পরিবেশ ও জীবজগতের জন্য ক্ষতিকর।
তবু এখনও ইটভাটা লোকালয় থেকে দূরে সরানো বা এর বিকল্প সমাধান নিয়ে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ে না।
আমার বাড়ির খুব কাছেই একটি ইটভাটা রয়েছে। প্রতিদিন সেখান থেকে কালো ধোঁয়া উড়তে দেখি।
সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ে পড়েছি, ইটভাটার ধোঁয়াকে বায়ুদূষণের বড় কারণ হিসেবে ধরা হয়। এই ধোঁয়ায় থাকে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন কণা এবং কার্বন ডাই-অক্সাইডের মত ক্ষতিকর উপাদান।
এগুলো বাতাসে মিশে গিয়ে বায়ু দূষিত করে এবং মানুষের স্বাস্থ্য ও অন্যান্য প্রাণীর স্বাভাবিক জীবনে ব্যাঘাত ঘটায়।
ইটভাটার ধোঁয়ার বিরূপ প্রভাব পড়ে গাছপালা ও ফসলের ওপরও। কখনো কখনো আকাশ এতটাই কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় যে সূর্যের আলো ঠিকমত ভূমিতে পৌঁছায় না।
আমাদের বাড়ির আশেপাশের গাছের পাতায় দাগ পড়তে দেখা যায়। বড়দের কাছে শুনেছি যে, এর পেছনে ইটভাটার ধোঁয়াই দায়ী। এমনকি কৃষকদের কাছ থেকেও জেনেছি যে, এই ধোঁয়ার কারণে ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে যায়।
এছাড়া আরেকটি সমস্যা হল, ইট পোড়াতে কাঠ ব্যবহারের ফলে বনজ সম্পদ ধ্বংস হয়। বন কমে গেলে বন্যা, খরা ও ঘূর্ণিঝড়ের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
এই ধোঁয়া শুধু বর্তমানের জন্য নয়, ভবিষ্যতের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইট তৈরি করা এবং নিয়ম না মানা ইটভাটাগুলো বন্ধ করা জরুরি।
সমস্যা সমাধানে দরকার বিকল্প পথ। বর্তমানে ব্লক ইট বা সলিড ব্লক নামের একটি পরিবেশবান্ধব বিকল্প জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সিমেন্ট, বালু এবং পাথর দিয়ে মেশিনের সাহায্যে তৈরি করা হয় এই ব্লক ইট। এতে কোনো ধোঁয়া বা আগুনের প্রয়োজন নেই, ফলে বাতাসও দূষিত হয় না।
সরকার যদি এ নিয়ে গবেষণা করে এবং পরিবেশের জন্য কল্যাণকর প্রমাণ পায়, তাহলে জনগণকে এই ব্লক ইট ব্যবহারে উৎসাহিত করা উচিত বলে আমি মনে করি।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৩। জেলা: রংপুর।