অনেক সময় শিশুরা অনলাইনে এমন কিছু দেখে ফেলতে পারে যা অস্বস্তিকর।
Published : 31 Jul 2025, 08:02 PM
স্মার্টফোন, ট্যাব বা কম্পিউটার নিয়েই যেন সময় কাটাতে পছন্দ করে শিশুরা। তারা অবাধে ব্যবহার করছে ইন্টারনেটও। যদিও এর ফলে শিশুর জন্য অনেক ভালো কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে এসব ভালো দিকের পাশাপাশি কিছু বিপদও আছে। তাই অভিভাবকের উচিত শিশুদের পাশে থেকে তাদের অনলাইন জগতকে নিরাপদ করে তোলা।
শুধু ফিল্টারেই চলবে না
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি পরিচালিত শিক্ষাবিষয়ক সাইট ‘বাইটসাইজ’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনলাইন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ কেন করনিশ বলেন, অনেক বাবা-মা প্যারেন্টাল কন্ট্রোল বা বিভিন্ন ফিল্টার ব্যবহার করেন, যাতে শিশু ভুল কিছু না দেখে। যদিও এটি একটি ভালো অভ্যাস, কিন্তু তাতে সব সমস্যার সমাধান হয় না। কারণ, অনেক শিশুই এসব ফিল্টার পাশ কাটাতে পারে। তাই বাবা-মাকে আরও সময় দিতে হবে, আর সরাসরি সন্তানের পাশে বসে তার অনলাইন ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
খোলামেলা আলাপ হোক অভ্যাস
শিশুরা কী দেখছে, কার সঙ্গে কথা বলছে, কী পোস্ট করছে- এসব নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে যেন তাদের স্বাভাবিক আলাপ হয়। ইউনিসেফের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, এমন আলোচনা শিশুদের শেখায় অনলাইনে যা করছে, তার সব কিছুরই একটা ছাপ থেকে যায়, যাকে বলা হয় ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট।
এমন খোলামেলা কথাবার্তা শুধু সচেতনতা নয়, সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ারও সুযোগ। করনিশও পরামর্শ দেন, বাবা-মা যেন একসঙ্গে বসে দেখে সন্তান কোন অ্যাপ ব্যবহার করছে, তাকে প্রশ্ন করে জানার চেষ্টা করে, এবং কীভাবে সে শিখছে, সেটাও বুঝে নেয়।
বিশ্বাস আর নিরাপত্তার পরিবেশ
অনেক সময় শিশুরা অনলাইনে এমন কিছু দেখে ফেলতে পারে যা অস্বস্তিকর। তখন বাবা-মা যেন আতঙ্কিত না হয়ে, শান্তভাবে সন্তানের সঙ্গে কথা বলেন। এতে শিশু বুঝবে সে নিরাপদ জায়গায় আছে এবং তার কোনো ভয় নেই। ধীরে ধীরে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে শিশু যেকোনো সমস্যার কথা খোলামেলা বলতে পারে, ভয় না পেয়ে।
প্রযুক্তির দিকেও সচেতনতা দরকার
কথার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সচেতনতাও জরুরি। ইউনিসেফ বলছে, মোবাইল বা ল্যাপটপ আপডেট রাখা, প্রাইভেসি সেটিং ঠিক রাখা, অপ্রয়োজনীয় ওয়েবক্যাম বন্ধ রাখা, এবং ভরসাযোগ্য ওয়েবসাইট ব্যবহার করাই ভালো অভ্যাস। আর এসব বিষয় প্রথমে বাবা-মাকে জানাতে হবে, কারণ শিশুরা দেখেই শেখে। বাবা-মা যদি নিজেই সচেতন থাকেন, তাহলে শিশুও সেটাই অনুসরণ করবে।
বাস্তব জীবনের ভারসাম্য জরুরি
ইন্টারনেট ব্যবহারের পাশাপাশি শিশুর জীবনে খেলাধুলা, গল্প করা, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর মত বিষয়গুলো যেন বাধাগ্রস্ত না হয়। ইউনিসেফ মনে করে, বাস্তব জীবনের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় থাকলে শিশুর মন ভালো থাকে, আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে এবং সে আরও সুন্দরভাবে বড় হতে পারে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: ঢাকা।