নবম বিজয়ী প্রতিযোগী হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করা হলে আমি অবাক হয়ে যাই।
                        Published : 21 Sep 2025, 08:57 PM
আমি তখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। বলছি, ২০২৩ সালের কথা। সে বছরের ৭ ডিসেম্বর স্কুলে ছিল বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
সেখানে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি একই দিন আমি আরও দুইটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার পাই। ফলে দিনটি আমার কাছে এক সুন্দর স্মৃতির অংশ হয়ে আছে।
প্রতিযোগিতা দুইটির একটি ছিল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। আর অন্যটি ছিল সাধারণ জ্ঞান ভিত্তিক একটি প্রতিযোগিতা। আমাদের উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই দুইটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
আমি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার কথা আগে থেকে জানতাম। তাই আগে থেকেই এর প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম। কিন্তু সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগিতার কথা জানতে পারি মাত্র একদিন আগে।
আয়োজনের দিন সকালে আমার স্কুলে পৌঁছাই। সেখানে গিয়ে দেখি আরও ১০ থেকে ১২ জন প্রতিযোগী চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। একজন আপা আমাদের সবকিছু বুঝিয়ে দিলেন।
এরপর প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য আমরা যখন বের হই তখন শুরু হল ঝুম বৃষ্টি। তবে আমরা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই প্রতিযোগিতার স্থানে চলে যাই। কিন্তু গিয়ে জানতে পারি বৃষ্টির কারণে প্রতিযোগিতা এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১২টায় শুরু হয় প্রতিযোগিতা। আমরা দুপুর ১টার মধ্যে ছবি আঁকা শেষ করে স্কুলে এসে বিদায় অনুষ্ঠানে যোগ দিই। কিন্তু পরেই আবার সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগিতা থাকায় দুপুর ২টার মধ্যে সেখানে চলে যাই।
আমি মোটামুটি ভালোভাবেই পরীক্ষা দিয়েছিলাম। সেখানে ৮০ জনের মত প্রতিযোগী ছিল। পরীক্ষা শেষে আমরা সেখানেই ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
এই প্রতিযোগিতায় নয় জনকে বিজয়ী ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু ফলাফল ঘোষণার সময় একে একে আট জনের নাম যখন বলা শেষ তখন আমি পুরস্কার জেতার আশা পুরোপুরি ছেড়েই দিয়েছিলাম। কিন্তু নবম বিজয়ী প্রতিযোগী হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করা হলে আমি অবাক হয়ে যাই। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।
সেখানে পুরস্কার হিসেবে একটা স্মৃতি-স্মারক পেয়েছি। পুরস্কারটি গ্রহণ করি আমার মাকে সঙ্গে নিয়ে।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার স্থানে যাই। সেখানে গিয়ে শুনি আমি উপজেলার মধ্যে প্রথম হয়েছি। আনন্দের আর শেষ কোথায়!
সেই থেকে আমার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায়। আর এই দিনটির কথা আমি কখনও ভুলব না।
প্রতিবেদকের বয়স: ১২। জেলা: কুড়িগ্রাম।