একজন মা তার সন্তানের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হতে পারলে, বাবাকেও তেমনটাই হওয়া উচিত।
Published : 17 Jul 2025, 07:22 PM
আমাদের সমাজে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, শিশুর সবচেয়ে ভালো বন্ধু হয়ে থাকেন মা। তার অঢেল ভালোবাসা, স্নেহ, আর যত্নের মাধ্যমে সন্তানের শৈশব অতিবাহিত হয়।
আর এজন্য মাকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। তিনি সন্তানের লালন-পালন থেকে শুরু করে সব দায়িত্ব পালন করেন। তার যেন আর ছুটি মেলে না।
মা যদি কর্মজীবী হয়ে থাকেন, তখনও সন্তানের সব দায়িত্ব তার উপরই চাপিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, বাবার কি এই দায়িত্বগুলো একইভাবে পালন করা উচিত নয়?
মায়ের তুলনায় বাবারা শিশুর সঙ্গে বেশি সময় কাটান না। অনেক বাবা হয়ত কাটান, তবে সেই সংখ্যাটা খুবই কম বলে আমার বিশ্বাস।
বাবারা সন্তানকে খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো বা গোসল করানোর মত সাধারণ দায়িত্বে এগিয়ে আসেন না। এমনকি শিশুর মলমূত্র পরিষ্কারের মত কাজের প্রতি তাদের অনীহা থাকে।
একজন মা তার সন্তানের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হতে পারলে, বাবাকেও তেমনটাই হওয়া উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, বাবার কাছে সামান্য টাকা বা অন্যকিছু চাইতে শিশু ভয় পাচ্ছে। অথচ সে তার মাকে অনায়াসে সেটা বলে ফেলতে পারছে। এটা কেন হচ্ছে, তা কি কখনও আমরা ভেবে দেখেছি?
এর একমাত্র জবাব হল, মা সন্তানের বন্ধু হতে পারছে। শিশুর খেলা, তার চাওয়া-পাওয়া কিংবা শখের প্রতি সবচেয়ে বেশি সহানুভূতি দেখাচ্ছেন মা।
ছোট থেকেই বাবা নামক ব্যক্তিটাকে আমাদের সঙ্গে পরিচয় করানো হয় যে, তিনি কঠোর এক মানুষ। তার দায়িত্ব শুধুই উপার্জন করা। তিনি শুধু সংসারের খরচ মেটাবেন, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন আর শাসন-বারণ করবেন। আমি মনে করি, পুরুষতান্ত্রিক চিন্তাধারা থেকেই এমনটা ঘটে আসছে।
দিনের পর দিন এমন চর্চা বাবার সঙ্গে আমাদের দূরত্ব তৈরি করেছে। নতুন প্রজন্মের অনেককেই দেখি, বাবার সঙ্গে যাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তবে আমার আগের প্রজন্ম সম্পর্কে শুনেছি, তাদের কাছে বাবা ছিল মূর্তিমান আতঙ্কের এক নাম। এমন বাবাও নাকি আছে, যিনি নিজের সন্তানকে কোলেও নিতে চাইতেন না।
আমি মনে করি, মায়ের মত বাবাকেও সমানভাবে শিশুকে সময় দেওয়া প্রয়োজন। দুজনেরই উচিত শিশুকে গোসল করানো, পোশাক পরিবর্তন করা, খাওয়ানো, স্কুলে নিয়ে যাওয়া, বেড়াতে যাওয়া কিংবা ছোট ছোট কষ্টগুলো শোনা। এছাড়াও শিশুর সঙ্গে খেলাধুলা করা এবং স্কুলের খবরও নেওয়া উচিত বাবাকে।
সহানুভূতি, ভালোবাসা, স্নেহ ও সময় দিয়ে সন্তানের সঙ্গী হলে এটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করবে। এছাড়াও, বাবা-মায়ের সম্পর্ককে আরও গভীর ও সুন্দর করে তুলবে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: ঢাকা।