প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকার পাতায় বায়ুদূষণের ভয়াবহতা নিয়ে খবর আসে।
Published : 19 Oct 2025, 07:05 PM
আমার এক ছোট বোন গত শীতে সুন্দরবন বেড়াতে গিয়েছিল। তাদের জাহাজ যখন বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি পৌঁছায়, তখন সে ডেকে দাঁড়িয়ে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে চায়। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও এদিন সে কোনো অসুবিধা অনুভব করেনি।
কিন্তু ঢাকায় বা বাংলাদেশের অন্য যেকোনো শহরে গেলে সে প্রায়ই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভোগে। বিষয়টি নিয়ে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এর মূল কারণ ছিল বাতাসের গুণগত মান। সমুদ্রের কাছে বাতাস ছিল বিশুদ্ধ। কিন্তু ঢাকাসহ দেশের অনেক স্থানের বাতাস দূষিত।
শুধু আমার বোনই নয়, বাংলাদেশের হাজারো শিশু শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছে বায়ুদূষণের কারণে। ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুরা শরীরের তুলনায় বেশি বাতাস গ্রহণ করে। ফলে তারা বেশি দূষণের শিকার হয়। অথচ এ সময় তাদের ফুসফুস, মস্তিষ্ক ও শরীর বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে থাকে।
প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকার পাতায় বায়ুদূষণের ভয়াবহতা নিয়ে খবর আসে। এই যেমন, ২০২৪ সালে দূষণের মাত্রায় বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। যা শুনে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে গিয়েছিল।
বিশ্ব মানদণ্ড অনুযায়ী একিউআই ০–৫০ থাকা ভালো, ২০১–৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর, আর ৩০০-এর বেশি হলে তা বিপজ্জনক। অথচ ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ঢাকার গড় একিউআই ছিল ৩১৮। যা গত নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এরকম পরিস্থিতিতে মানুষের আয়ের বড় অংশ এখন ব্যয় হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবায়। অসুস্থতার কারণে অনেক শিশু স্কুলে যেতে পারছে না, ব্যাহত হচ্ছে তাদের শিক্ষা জীবন। এক বায়ুদূষণ কতভাবে মানুষের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে তা বলে শেষ করার মত নয়।
তারপরও আমরা সচেতনতার প্রথম ধাপেই থেমে আছি। গাড়ির কালো ধোঁয়া, টায়ার পোড়ানো কিংবা পরিবেশবান্ধব শিল্প না গড়ে তোলার ফলে আমাদের ভবিষ্যতকে প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মুখে ফেলছি।
তাই আমি মনে করি, আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে। তা না হলে আগামী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ বাতাস আমরা রেখে যেতে পারব না।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: ঢাকা।