‘বাল্যবিয়ে বন্ধ করার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে,ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে,কমিউনিটি ক্লিনিকে ও কমিউনিটি সেন্টারে বিভিন্নভাবে বৈঠক করা যেতে পারে।’
Published : 23 Apr 2024, 03:55 PM
বিয়ের নিবন্ধন না করে বাল্যবিয়ে সংঘটিত করা হচ্ছে বলে ধারণা কাজী মো. জাহেদুল ইসলামের। তিনি কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের মুসলিম বিবাহ ও তালাক নিবন্ধক। হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, অপ্রাপ্ত বয়সী কারো বিয়ে নিবন্ধন করার সুযোগ নেই কাজীদের।
হ্যালো: বাল্যবিয়ে পড়ানোর অনুরোধ এলে আপনি কী করেন?
মো. জাহেদুল ইসলাম: সাধারণত বাল্যবিয়ে পড়ানোর জন্য আমাদেরকে রাতের বেলা ডাকা হয়। তখন আমি জিজ্ঞেস করি, পাত্র বা পাত্রীর বয়স কত। অন্তত জন্ম তারিখটা বলতে হবে। যেহেতু আমরা বিয়ে নিবন্ধন করব। তখন দেখা যায়, মেয়ের অভিভাবকরা সেটা বলে না। দুই-তিন বার জিজ্ঞেস করার পর সত্যিকার বয়সটি বলে।
তখন আমি বলি যে, আমি এই বিয়ের নিবন্ধন করব না। আপনারা ধৈর্য ধরেন, মেয়েটার বয়স হোক। এরপর দেখা যায়, তারা আর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে না। আমরাও আর তাদের খোঁজ নেওয়ার সুযোগ পাই না।
হ্যালো: বাল্যবিয়ে পড়ানোর জন্য আপনাদের উপর কোনো চাপ আসে?
মো. জাহেদুল ইসলাম: চাপের ব্যাপারটা বর্তমানে আসলে তেমন নেই।
হ্যালো: বাল্যবিয়ের জন্য অনেক সময় কাজীকেও দায়ী করা হয়। এই বিষয়ে আপনি কিছু বলতে চান?
মো. জাহেদুল ইসলাম: বাল্যবিয়ের তো এখন নিবন্ধন হয় না। বাংলাদেশ সরকার যে নিকাহনামা দিয়ে দিয়েছে, সেটা হলো যে জন্মনিবন্ধন, আইডি কার্ড ও কাগজপত্র আছে সেগুলো কাজীরা অনলাইনে চেক করবে। একটি অনলাইন অ্যাপস আছে সেখানে আমরা চেক করে যখন দেখা যাবে, মেয়ের ১৮ ও ছেলের ২১ বছরের বেশি বয়স হয়েছে, আমরা বিয়ের নিবন্ধন করি। আর যদি নির্ধারিত বয়সের একদিনও কম হয়, তখনও আমরা নিবন্ধন করব না। এখানে আমাদের কোন হাত নেই।
হ্যালো: বাল্যবিয়ে বন্ধে কোন কোন পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী বলে আপনি মনে করেন?
মো. জাহেদুল ইসলাম: বাল্যবিয়ে বন্ধ করার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে,ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে,কমিউনিটি ক্লিনিকে ও কমিউনিটি সেন্টারে বিভিন্নভাবে বৈঠক করা যেতে পারে।
প্রজেক্টেরের মাধ্যমে দেখানো যেতে পারে যে, ১৬ বা ১৫ বছর বয়সে যখন মেয়েরা গর্ভবতী হয়, তখন তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। বাল্যবিয়ের ফলে মা ও শিশু উভয়েরই প্রাণ হারানোর শঙ্কা থাকে। এই বিষয়গুলো পিতা-মাতাদের দেখানোর মাধ্যমে সচেতন করা যেতে পারে। তারা যদি দেখে যে, বাল্যবিয়ের এত কুফল রয়েছে, তখন তারা মেয়ের বাল্যবিয়ে দিতে চাইবে না।
আমি মনে করি, বিভিন্ন চেয়ারম্যানদের সচেতন করতে হবে। তারা যেন টিকা কার্ড না দেখে জন্ম সনদ ইস্যু না করেন। ছেলে শিশু বা মেয়ে শিশু উভয়কেই যেন টিকা কার্ড দেখে তারপর জন্ম সনদ দেওয়া হয়।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: কুড়িগ্রাম।