'সন্তান প্রসবের পর মেয়েরা পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশনে (প্রসবোত্তর বিষণ্নতা) ভুগতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ৮০ শতাংশ মেয়ে ‘পোস্ট পার্টাম ব্লুজ’ জটিলতায় ভোগে। অর্থাৎ সন্তান জন্মদানের পর এক ধরনের বিষণ্ণতা তাকে গ্রাস করে।'
Published : 19 May 2024, 05:55 PM
বাল্যবিয়ের কারণে মেয়েরা দীর্ঘ মেয়াদী মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হাবিবুর রহমান সজিব। তিনি বলে সন্তান প্রসবের আগে-পরেও মেয়েদের নানা ধরনের মানসিক সমস্যায় ভোগার আশঙ্কা থাকে।
হ্যালো: বাল্যবিয়ের কারণে কোনো মেয়ে শিশু কি দীর্ঘ মেয়াদী মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারে?
হাবিবুর রহমান সজিব: এই বিষয়ে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। আমি একটা গবেষণার কথা বলতে পারি, ইরানের কুর্দি গোষ্ঠীর মেয়েদের মধ্যে যাদের অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছে তাদের নিয়ে এই গবেষণাটি করা হয়। সে গবেষণায় দেখা যায়, সে সব মেয়েদের দ্রুত বিয়ে হয়েছে তাদের মধ্যে ‘মেজর ডিপ্রেসিপ ডিজঅর্ডার’ (এমডিডি) এর প্রবণতা বেশি থাকে।
এছাড়া ‘পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার’ এর প্রবণতাও দেখা যায়। যেহেতু অল্প বয়সে বিয়ের ফলে মেয়েরা শারীরিক ও মানসিক ভাবে তৈরি থাকে না, তখন অনেক সময় দেখা যায় জৈবিক চাহিদাসহ বিভিন্ন কারণে সে জোর জবদস্তির শিকার হয়। এতে করে তার মধ্যে ট্রমা তৈরি হতে পারে।
হ্যালো: সন্তান প্রসবের সময়েও তো তাকে মানসিক কষ্ট ভোগ করতে হয়...
হাবিবুর রহমান সজিব: বিবাহ পরবর্তী সময়ে সন্তান ধারণ ও সন্তান জন্মদান খুব অল্প বয়সী মেয়ের জন্য একটি উদ্বেগজনক ঘটনা হতে পারে। ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন ধরনের এনজাইটি ডিজঅর্ডার যেমন ‘জেনারালাইজড এনজাইটি ডিজঅর্ডার’ ও ‘অপসেসিভ কমপালসিভ ডিজঅর্ডার’ এর মতো মানসিক সমস্যায় ভুগতে পারে।
সন্তান প্রসবের পর মেয়েরা পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশনে (প্রসবোত্তর বিষণ্নতা) ভুগতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ৮০ শতাংশ মেয়ে ‘পোস্ট পার্টাম ব্লুজ’ জটিলতায় ভোগে। অর্থাৎ সন্তান জন্মদানের পর এক ধরনের বিষণ্ণতা তাকে গ্রাস করে।
এমনকি আমাদের বাংলাদেশের মেয়েদের মধ্যেও এই ধরনের সমস্যা প্রচুর দেখা যায়। কিন্তু ‘প্রোপার এসেসমেন্ট’ বা ‘সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট’ এর অভাবে অনেকে এই ধরনের সমস্যার কথা প্রকাশ করতে পারে না। যে কারণে তারা সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়।
আমরা কখনো কখনো সংবাদে দেখতে পাই, মা তার নবজাতক সন্তানকে গলা টিপে মেরে ফেলছে বা পাশের পুকুরে ফেলে দিচ্ছে। এটিও কিন্তু এক ধরনের মানসিক সমস্যা। মা যখন মানসিক ভাবে খুব চাপে থাকে বা তার যদি বংশগতীয় ভাবে কোনো সাইকিয়াট্রিক ডিজঅর্ডার থাকে তাহলে সে ‘সাইকোসিস’ নামের এই ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যার ফলে তার দ্বারা এমন অনাকাঙ্ক্ষিত কাজও হয়ে যেতে পারে।
এছাড়া অল্প বয়সে বিয়ের ফলে ‘মুড ডিসঅর্ডার’ যেমন ‘বাইপোলার ডিসঅর্ডার’ এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: বাগেরহাট।