আমি কলেজের পোশাক পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে কলেজ ছাত্রী হিসেবে প্রথম দেখলাম।
Published : 10 Apr 2025, 09:33 PM
এসএসসি পাশের পর আমি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গার্লস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হই। এই কলেজে ভর্তি হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার শিক্ষাজীবনের নতুন একটি অধ্যায় শুরু হয়।
২০২৪ সালের ১৫ জুলাই বাবার হাত ধরে নিজের জেলা দিনাজপুর ছেড়ে ঢাকায় চলে আসি। কলেজে ভর্তি হওয়ার ওই সময়টাতে কোটা নিয়ে আন্দোলন তীব্র হতে থাকে। এক পর্যায়ে সবকিছু স্থবির হয়ে যায়। এর ফলে আমাদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানও স্থগিত হয়ে যায়।
দেশের পরিস্থিতি কিছুটা পরিবর্তন হলে নবীন বরণের জন্য ৮ অগাস্টকে বেছে নেওয়া হয়। এই দিনটি আমার কলেজ জীবনের প্রথম দিন হবে ভেবে খুবই উচ্ছ্বসিত ছিলাম।
অবশেষে এল ৮ তারিখ। এদিন ভোরে ঘুম ভাঙতেই মনে এক অদ্ভুত অনুভূতি আর উত্তেজনা কাজ করছিল। আমি কলেজের পোশাক পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে কলেজ ছাত্রী হিসেবে প্রথম দেখলাম, এই অনুভূতিটা খুবই আনন্দের।
ঢাকায় আমি হোস্টেলে থাকি। এখানকার কয়েকজন নতুন বন্ধুর সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে সেদিন পৌঁছে গিয়েছিলাম কলেজ প্রাঙ্গণে। প্রধান ফটক পেরোতেই যে দৃশ্যটা আমাকে প্রথম মুগ্ধ করে তা হল, সবুজে ঘেরা শান্ত ও ছায়াময় এক ক্যাম্পাস। সকালের নরম আলোয় গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়ছিল আর বাতাসে ভেসে আসছে ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ। যেন প্রকৃতি নিজেই আমাদের স্বাগত জানাচ্ছে।
কলেজের মিলনায়তনে আমাদের নবীনবরণ হয়। আমরা মিলনায়তনে পৌঁছে দেখি সারি সারি চেয়ারের সামনে একটি সাজানো মঞ্চ। আমরা সবাই চেয়ারে বসে অনুষ্ঠান শুরুর অপেক্ষা করছিলাম।
কিছুক্ষণ পর কলেজ অধ্যক্ষ মঞ্চে আসেন। তিনি আমাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। বক্তব্যে দিকনির্দেশনার পাশাপাশি আমাদের সাহস আর উৎসাহ দেন তিনি।
এরপর শ্রেণি শিক্ষকরা আমাদের নিজ নিজ শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যান। সেখানে কলেজ জীবনের নিয়ম-কানুন, পাঠ্যবিষয় এবং নানা দায়-দায়িত্বের কথা জানান।
প্রথমে ক্লাসে সবাই ছিল অপরিচিত। সব মুখই ছিল নতুন ও অচেনা। ধীরে ধীরে সেই অচেনা মুখগুলোই পরিচিত হয়ে উঠতে শুরু করল। চোখে চোখে আলাপ, কথায় কথায় বন্ধুত্বও হয়ে গেল। এরপরে ক্লাস শেষে আমরা সবাই একসঙ্গে কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে দেখি।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: ঢাকা।