'আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে এই শিশুকে গাজার সবচেয়ে কম বয়সী সাংবাদিক বলে পরিচয় করিয়ে দেয়।'
Published : 04 Mar 2024, 12:00 PM
ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধে বিধ্বস্ত গাজার চারদিকে কেবল ধ্বংসস্তুপ। সম্প্রতি আল জাজিরার এক ভিডিও প্রতিবেদনে দেখা যায়, গাজার এই ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে যুদ্ধের ভয়াবহতার কথা জানাচ্ছে সুমাইয়া উশাহ নামের এক ফিলিস্তিনি শিশু সাংবাদিক।
ভিডিওতে তাকে বলতে দেখা যায়, “আমার নাম সুমাইয়া উশাহ। আমার বয়স ১১ বছর। আমি গাজা উপত্যকা থেকে এসেছি।”
আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে এই শিশুকে গাজার সবচেয়ে কম বয়সী সাংবাদিক বলে পরিচয় করিয়ে দেয়।
এই প্রতিবেদনে শিশু সাংবাদিক সুমাইয়ার বিভিন্ন সময়ে ধারণ করা ভিডিও প্রতিবেদনের কিছু কিছু অংশ তুলে ধরা হয়।
একটি বাড়ির ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে তাকে বলতে দেখা যায়, “আমরা এখন আবদুল্লাহ পরিবারের বাড়ির ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে আছি। এই বাড়িতে ১৭ জন মানুষ শহীদ হন।”
ভিডিওর পরের অংশে একটি বেকারির সামনে দাঁড়িয়ে সুমাইয়াকে বলতে দেখা যায়, “আমি এখন আল-সোফারা বেকারির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এটি নুসিরাত ক্যাম্পের (মধ্য গাজা উপত্যকার একটি শরণার্থী শিবির) একমাত্র বেকারি যা এখনো চালু আছে। এখানে আমি বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষকে একটি রুটির জন্য অপেক্ষা করতে দেখছি।”
এরপর নুসিরাত শরণার্থী শিবিরের একটি বাজারে দাঁড়িয়ে সে বলে, “আমি এখন নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে আছি। এটি এই ক্যাম্পের বাজার। এখানে ঘর হারানো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। যারা মৃত্যু থেকে বাঁচতে দক্ষিণ গাজার শহর রাফা থেকে পালিয়ে এসেছে।”
আল জাজিরাকে সুমাইয়া জানায়, সে শিরিন আবু আকলেহের মতো সাংবাদিক হতে চায়। এই শিরিন আবু আকলেহ আল জাজিরার একজন সাংবাদিক ছিলেন যিনি ইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনের শহর জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হন।
এই শিশু সাংবাদিক আল জাজিরাকে আরও বলে, “যুদ্ধের আগেও আমি সাংবাদিক হতে চেয়েছিলাম। আমি চেয়েছিলাম বিশ্বের কাছে নিজেকে প্রমাণ করতে।
“শিরিন আবু আকলেহ আমার রোল মডেল। আমি তার মতো করে নিজেকে প্রমাণ করতে চাই।”
গাজার মিডিয়া অফিসের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, চলমান এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে সুমাইয়া বিশ্বকে গাজার খবর জানানোর কাজ অব্যাহত রেখেছে।
ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ প্রচারের কাজ করতে ভয় পায় কিনা, আল জাজিরার এমন প্রশ্নের জবাবে সে বলে, “না, আমি ভয় পাই না। কারণ আমি যখন সাংবাদিকতার কাজে বের হই আমি ঈশ্বরের উপর ভরসা করি।"
সে আরও বলে, “আমার মা এবং বাবা আমার এই কাজের পক্ষে ছিলেন না। কারণ তারা জানেন যে সাংবাদিকদের লক্ষ্য (হামলার) করা হচ্ছে।”
এরপর সুমাইয়া বলে, “আমার বাবা মা যখন বুঝতে পারলেন আমি এই কাজে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, তখন তারা রাজি হয়ে যান।”
সে জানায়, প্রতিবার কাজে বের হওয়ার আগে সে ঈশ্বরের উপর ভরসা করে এবং বাবা-মাকে জানিয়েই বের হয়।
“আমি এই যুদ্ধের অবসান চাই এবং আমি চাই, বিশ্ব গাজার শিশুদের মানবিক সহায়তা প্রদান করবে”, ভিডিও প্রতিবেদনটির শেষাংশে এই আহ্বান জানায় সে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৩। জেলা: ঢাকা।