বিংশ শতাব্দীর অন্যতম বাঙালি কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমার স্কুলে এক অনুষ্ঠান হবে।
Published : 24 May 2015, 09:20 AM
সেখানে নজরুলকে নিয়ে আমার একটি বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। তাই তাকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই ও পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়ছিলাম। অনেক কিছু জানলাম।
তিনি লেখালেখিতে যেমন বিদ্রোহী ছিলেন তেমনই কর্মেও ছিলেন। এজন্যই তাকে 'বিদ্রোহী কবি' বলা হয়।
নজরুল ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ ও ইংরেজি ১৮৯৯ সালের ২৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম নেন।
ছোট বেলায় বড্ড ডানপিটে ছিলেন নজরুল। কারো শাসন, বারণ মানতেন না। এমনকি কাউকে ভয়ও পেতেন না।
কবির ছেলেবেলা কেটেছে অনেক দুঃখ কষ্টে। কবি শৈশবেই তার বাবাকে হারান। অভাব অনটন তাকে সেই ছোটকালেই কাজে নামতে বাধ্য করে।
আসানসোলে তিনি মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করেছেন আবার খাবারের হোটেলেও কাজ করেছেন।
কাজ করার পাশাপাশি তিনি লেটো গানের দলে গান গাইতেন।
এই দোকানে কাজ করার সময় আসানসোলের দারোগা রফিজুল্লাহর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তিনি নজরুলের লেখা ছড়া পড়ে মুগ্ধ হন।
তিনি ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহের ত্রিশালের দড়িরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন।
নজরুল খুবই ভালো ছাত্র ছিলেন। আর পড়তে খুব ভালোবাসতেন। তাকে সন্ধ্যায় বড় একটি কুপিতে কেরোসিন ভরে দিলে সকালে দেখা যেত কুপির তেল শেষ। মানে যতক্ষণ কুপির তেল ছিল ততক্ষণ তিনি পড়েছেন।
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে মাধ্যমিকের প্রিটেস্ট পরীক্ষা না দিয়ে তিনি সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন।
১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ২৪ মে ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়।
কবির বাকি জীবন বাংলাদেশেই কাটে। বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭৪ সালে ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমাবর্তনে তাকে এই উপাধি প্রদান করা হয়।
১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়। ওই একই বছর তিনি একুশে পদক পান এবং একই বছরের অগস্ট মাসে তিনি মারা যান।
নজরুল তার একটি গানে লিখেছেন, "মসজিদেরই কাছে আমায় কবর দিয়ো ভাই / যেন গোরের থেকে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই";- কবির এই গানকে তার ইচ্ছা বিবেচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবর দেওয়া হয়।