বাল্যবিয়ের জন্য দারিদ্র্য ও শিক্ষার অভাবকে দায়ী মনে করেন ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল।
Published : 05 May 2024, 05:17 PM
তার মতে সামাজিক নিরাপত্তার অভাবও বাল্যবিয়ের অন্যতম কারণ। হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় শিশুবিয়ে প্রতিরোধের নানা উপায় নিয়েও কথা বলেন তিনি।
হ্যালো: ভোলা জেলায় বাল্যবিয়ের সংখ্যা কেমন? বাল্যবিয়ের খবর পেলে কী ধরনের ভূমিকা গ্রহণ করেন?
সজল চন্দ্র শীল: ভোলা নদী ভাঙন প্রবণ একটি জেলা। এখানে দরিদ্রতাও আছে। কাজেই, এখানে বাল্যবিয়ে হচ্ছে না, এমনটা আমি বলব না। আমাদের অগোচরে অনেক সময় বাল্যবিয়ে ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। আমরা গোপন সূত্রের মাধ্যমে খবর পেলে সেখানে গিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিই।
অনেক সময় খবর পাই আমাদের সীমানা পেরিয়ে অন্য উপজেলায় গিয়ে বিয়ে পড়ানো হচ্ছে। এখন আমরা সংশ্লিষ্ট কাজীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই। আমরা আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রাখছি। আমরা ভোলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করতে চাই।
সবাই একসঙ্গে কাজ করলে আমরা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে পারব। কিন্তু এখানে কিছু বিষয় আছে, অনেক দরিদ্র পরিবার রয়েছে যারা মনে করে যে, মেয়ের বিয়ে দিতে পারলে তারা বেঁচে যায়। কিন্তু আসলে এটি সঠিক নয়। এটার কারণে পরবর্তীতে মেয়েটি ও রাষ্ট্র উভয়কেই ভুগতে হয়। দেখা যায়, মেয়েটি হতাশায় ভোগে এবং পারিবারিক একটা অশান্তির সৃষ্টি হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শারীরিক জটিলতায় মেয়েটি প্রাণও হারায়।
আমরা চাই মেয়েরা মূল স্রোতে থাকুক। তারা পড়াশোনা করুক, শিক্ষিত হোক। শিক্ষিত হয়ে তারা সমাজে তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াক ও আমাদের দেশ গঠনে তারা ভূমিকা রাখুক।
হ্যালো: বিয়ের শিকার কোনো কিশোরী পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাইলে উপজেলা প্রশাসন কী ধরণের ভূমিকা গ্রহণ করে?
সজল চন্দ্র শীল: বিয়ে হয়ে গেছে এমন কোনো কিশোরী যদি পড়াশোনা করতে চায়, আমি আমার প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি। এরকম ঘটনা আমার চোখে এখনো পড়েনি। ভবিষ্যতে যদি এমন ঘটনা ঘটে, আমি মেয়েটিকে স্বাবলম্বী করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করব।
তাকে মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য আমাদের যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে তাকে এর আওতাভুক্ত করার জন্য চেষ্টা করব। প্রশাসন থেকে তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। যাতে সে অল্পতেই ভেঙে না পড়ে এবং আমাদের দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে ও নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে সে ব্যবস্থা করব।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: ভোলা।