বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস
পৃথিবীর ১৭টি দেশে সবচেয়ে বেশি জীববৈচিত্র্য দেখা যায়।
Published : 22 May 2025, 04:37 PM
মানুষ ছাড়াও পৃথিবীতে আছে নানা রকমের প্রাণী, উদ্ভিদ আর ছোট ছোট অণুজীব। এরা সবাই দেখতে, গঠনে আর কাজে একে অপরের থেকে আলাদা।
পরিবেশের সঙ্গে তাদের সবার সম্পর্কও একই রকম নয়। তবে সবাই কোনো না কোনোভাবে পরিবেশের উপকার করে। এই ভিন্নতা অর্থাৎ জীবদের মাঝে যে পার্থক্য দেখা যায় সেটিই হল জীববৈচিত্র্য।
বিজ্ঞান ও গবেষণা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের ‘মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি’ জাদুঘরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, জীববৈচিত্র্য মানে শুধু বিভিন্ন প্রাণীর সংখ্যা নয়, বরং তারা কীভাবে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত এবং প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে তাও জীববৈচিত্র্যের অংশ। এই জীববৈচিত্র্যই প্রকৃতিকে টিকিয়ে রাখে।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জীববৈচিত্র্যের হুমকি মানে মানবজাতির উপর হুমকি। আমাদের প্রাণিজ আমিষের ২০ শতাংশ আসে মাছ থেকে। এছাড়া মানবজাতির খাদ্যতালিকার ৮০ শতাংশের বেশি উপাদানের জোগান দেয় বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ।
সেখানে আরও বলা হয়েছে, উন্নয়নশীল দেশের গ্রামে বসবাস করা অনেক মানুষ এখনো তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ভরসা করেন গাছ থেকে তৈরি প্রথাগত চিকিৎসার ওপর।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, পৃথিবীর ১৭টি দেশে সবচেয়ে বেশি জীববৈচিত্র্য দেখা যায়। এই দেশগুলোকে বলা হয় ‘মেগা-ডাইভার্স’। এদের মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর প্রায় ৭০ শতাংশ জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ পরিবেশ।এই দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল—অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চীন, কলম্বিয়া, কঙ্গো ও ইকুয়েডর।
অস্ট্রেলিয়ায় আছে লক্ষাধিক উদ্ভিদ ও প্রাণী। কেবল এই দেশেই পাওয়া যায় ক্যাঙ্গারু, কোয়ালা আর ডিঙ্গোর মত বিশেষ প্রাণী। ব্রাজিলে রয়েছে বিশাল জলাভূমি, যেখানে বাস করে নানা রকমের পাখি, স্তন্যপায়ী আর উভচর প্রাণী।
চীনে দেখা মেলে জায়ান্ট পান্ডা আর তিব্বতি হরিণের মত বিরল প্রাণী। কলম্বিয়ায় পাখি আর উভচর প্রাণীর সংখ্যা অনেক বেশি। কঙ্গো আফ্রিকার অর্ধেক মিঠা পানির উৎস এবং বহু উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল। আর ইকুয়েডর, বিশেষ করে গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ, দুষ্প্রাপ্য প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য বিশ্বখ্যাত।
জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে ১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবসের প্রচলন করে জাতিসংঘ। তখন জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কনভেনশন কার্যকরের দিন হিসেবে ২৯ ডিসেম্বর এই দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়
তবে ২০০০ সালের ডিসেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দিবসটি পালনের তারিখ পরিবর্তন করে ২২ মে নির্ধারণ করে। কারণ ডিসেম্বর মাসে ছুটির মৌসুম থাকায় অনেক দেশের জন্য ২৯ ডিসেম্বর তারিখে দিবসটি যথাযথভাবে পালন করা কঠিন হয়ে পড়ছিল।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৩। জেলা: ঢাকা।