প্রতি বছর একজন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী পুরস্কারটি হস্তান্তর করেন। এজন্য পুরস্কারটিকে অনেকেই বলে থাকে ‘শিশুদের নোবেল’।
Published : 12 Oct 2025, 09:29 PM
আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার ২০২৫-এর জন্য মনোনয়ন পেয়েছে হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের তিন শিশু সাংবাদিক।
মনোনয়ন পাওয়া এই সাংবাদিকরা হল- কাশফিয়া জান্নাত কুহু, কারিমা ফেরদৌসী কেকা ও সুদীপ্ত দেবনাথ।
পাশাপাশি হ্যালো থেকে সদ্য বিদায় নেওয়া আবদুল্লাহ আল শিহাব ও মাহবুব আল হাসানও এই মনোনয়ন পেয়েছে।
শিশু সাংবাদিক কাশফিয়া জান্নাত কুহু ২০২১ সাল থেকে হ্যালোর সঙ্গে যুক্ত। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরে হলেও বর্তমানে পরিবারসহ ঢাকায় থাকে সে।
১৫ বছর বয়সী কুহু হ্যালোকে বলে, “পুরস্কার পাই কিংবা না পাই আমি আমার কাজ করে যাব। শিশু শান্তি পুরস্কারের জন্য নমিনেশন পাওয়াটা একটা অনুপ্রেরণা।”
তার বড়বোন কারিমা ফেরদৌসী কেকাও এই স্বীকৃতি পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত।
কেকা বলছিল, “আমরা দুই বোন একসঙ্গে পেয়েছি। এটাই অনেক বেশি ভালো লাগছে। শিক্ষক, সহপাঠী, স্বজন সবাই শুভ কামনা জানাচ্ছে।”
প্রায় একই কথা জানাল একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া সুদীপ্ত দেবনাথ। সাতক্ষীরা থেকে শিশু সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছে সে।
“আমি শিশুদের নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসি। শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ে নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে আমার। পুরস্কার পেলে তার পুরোটাই শিশুদের জন্য ব্যয় করতে চাই,” বলছিল ২০২২ সালে হ্যালোতে যুক্ত হওয়া সুদীপ্ত।
হ্যালোর হাত ধরেই শিশু অধিকার বিষয়ে কাজের প্রেরণা পেয়েছিলেন আবদুল্লাহ আল শিহাব।
এই তরুণ বলেন, “শিশুদের নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা আমি হ্যালো থেকেই পেয়েছি। শিশু অধিকার, লিঙ্গ সমতা নিয়ে মূলত আমি হ্যালোর মাধ্যমেই ধারণা পেয়েছি। তাই হ্যালোর অবদান অস্বীকার করার মত না।”
মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মাহবুব আল হাসানও এই মনোনয়ন পেয়েছেন। কিশোরগঞ্জের হয়বতনগর আনওয়ারুল উলুম কামিল মাদ্রাসায় আলিম দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন তিনি।
ছবি তুলতে ভালোবাসেন মাহবুব। তাই হ্যালোতে নানা বিষয় তিনি ছবির মাধ্যমেই তুলে ধরতেন।
মনোনয়ন প্রসঙ্গে বলছিলেন, “মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সহশিক্ষা কার্যক্রমে একটু কম যুক্ত বলে মনে হয় আমার। তারা শুধু পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকে। তবে আমি এই বাধা অতিক্রম করেছি। আমি চাই মাদরাসার শিক্ষার্থীরা সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে কাজ করুক। এজন্য শিক্ষকদের উৎসাহ বেশি জরুরি।”
২০২০ সালে আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার পায় বাংলাদেশের কিশোর সাদাত রহমান। 'সাইবার বুলিং’ থেকে শিশুদের রক্ষায় কাজ করে সে এই সম্মাননা অর্জন করে।
শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নাজুক অবস্থায় থাকা শিশুদের সুরক্ষায় কাজের জন্য প্রতি বছর এই পুরস্কার দেয় ‘কিডস রাইটস’ নামের নেদারল্যান্ডসের একটি সংগঠন। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা এই পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারে।
২০০৫ সালে ইতালির রাজধানী রোমে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদের এক সম্মেলন থেকে সম্মানজনক এই পুরস্কার চালু করা হয়। প্রতি বছর একজন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী পুরস্কারটি হস্তান্তর করেন। এজন্য পুরস্কারটিকে অনেকেই বলে থাকে ‘শিশুদের নোবেল’।
কিডস রাইটসের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এবার বিশ্বজুড়ে মোট ১৭৩ জন মনোনয়ন পেয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মনোনীত হয়েছে ৩৩ জন। এ তালিকায় রয়েছে মিয়ানমার থেকে এসে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মাউং সোলায়মান নামের এক কিশোর।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: ঢাকা।