সাইকেল চালিয়ে যেতে যেতে রাত ১২টা পেরিয়ে যায়।
Published : 26 Apr 2025, 07:14 PM
সাইকেল আমার খুবই প্রিয়, তাই প্রতিদিন সাইকেল নিয়ে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াই। সাইক্লিং ক্লাবেও যোগ দিয়েছি, যার ফলে মাঝে মাঝে তাদের সঙ্গে রাইডে যাই।
একদিন সাইক্লিং ক্লাবের গ্রুপে একটি পোস্টে দেখলাম সবাই মিলে সুনামগঞ্জের নীলাদ্রি যাবে। এটি ছিল একটি ম্যারাথন ইভেন্ট, যেখানে আমাদের সাইকেল রাইডের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে অংশগ্রহণ করতে হবে। উৎসাহ নিয়ে আমি নাম দিয়ে দিলাম।
পরদিন সকালে বাসা থেকে রওনা দিলাম, তবে শুরুতে ঠিক জানতাম না কতটা দূরত্ব হবে। আমাদের ক্লাবের সদস্যরা জানাল সিলেট বাস স্ট্যান্ড থেকে সুনামগঞ্জের বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত বাসে যাব এবং সাইকেল বাসের উপর থাকবে।
এরপর বাস থেকে নেমে সাত থেকে আট কিলোমিটার সাইকেল চালাতে হবে। তবে সবার কাছ থেকেই জানতে পারলাম, আসল দূরত্ব প্রায় ৬৩ কিলোমিটার।
আমার জন্য এটি ছিল বড় দূরত্বের দ্বিতীয় রাইড তাই একটু ভয় লাগছিল। সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে রওনা দিয়ে বাসে সুনামগঞ্জ পৌঁছালাম। সেখানে পৌঁছানোর পর একটু বিশ্রাম নিয়ে সাইকেল নিয়ে নীলাদ্রির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি।
প্রথম ১৫ কিলোমিটার সহজে পাড়ি দিলেও পরের পথটা ছিল একটু কষ্টকর। পায়ে ব্যথা অনুভব করছিলাম। তবে, সাইক্লিং টিমের সহযোগিতা আমাকে সাহস জুগিয়েছে।
সাইকেল চালিয়ে যেতে যেতে রাত ১২টা পেরিয়ে যায়। যাত্রা শুরুর প্রায় ৬ ঘণ্টা পর আমরা গন্তব্যে পৌঁছাই।
পথের অনেকটা অংশে আমার সঙ্গীরা নানাভাবে সহযোগিতা করেছে যা আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে।
সেই রাতে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট টিম আমাদের জন্য তাবুর ব্যবস্থা করে রেখেছিল। খাওয়া-দাওয়া করে আমরা দ্রুত ঘুমিয়ে পড়লাম, যাতে পরের দিন সকালে সতেজ থাকতে পারি।
সকালে ঘুম থেকে উঠে, নাস্তা করে আমরা ইভেন্টের কাজ শুরু করি। ইভেন্টটি সফলভাবে শেষ করার পর খাবার খেয়ে আমরা আবার সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দিই।
তবে রাস্তায় যাওয়ার সময় মনে হল যদি রাত হয়ে যায় তবে কোথাও বিশ্রাম নিতে হবে। তখন সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, সুনামগঞ্জের শিমুলবাগান ঘুরে রাতে এক বন্ধুর গ্রামে থাকব এবং পরের দিন সিলেট ফিরব।
সেদিন রাতে আবার খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন সকালে উঠেই নাস্তা করে আমরা সুনামগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডের দিকে রওনা দিলাম।
সেখান থেকে বাসে করে সিলেটে চলে আসি। রাতে সিলেটে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় ৮-৯টা বেজে গিয়েছিল।
এভাবেই শেষ করলাম আমার সবচেয়ে দীর্ঘ ১১৫ কিলোমিটার দূরত্বের সাইকেল রাইড।
সিলেটে পৌঁছে আমার সঙ্গীদের বিদায় জানিয়ে বাসায় ফিরলাম। বাসায় আসার পর পরিবারের সদস্যরা জানতে চাইল কেমন ছিল যাত্রা, কীভাবে কাটালাম সময়, কোথায় কোথায় ঘুরলাম। এরপর তাদেরকে সব ঘটনার বিস্তারিত বলেছি।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: সিলেট।