মাঝে মাঝে ভয় পেতাম, আবার কখনো এত হাসতাম যে পুরো বাড়িতে হাসির রোল পড়ে যেত।
Published : 26 Apr 2025, 06:16 PM
আমার শৈশবের কথা বলছি। তখন গ্রামের অনেক বাড়িতেই বিদ্যুৎ ছিল না। আলোর একমাত্র উৎস ছিল কুপি বা হারিকেন। সন্ধ্যা নামলেই সব আলো নিভে যেত।
সেই দিনগুলোতে সন্ধ্যা কাটত খুবই ব্যতিক্রমভাবে। তখন আমরা সবাই মিলে উঠানে বা বারান্দায় বসতাম গল্প শুনতে।
দাদা রাক্ষসের গল্প বলতেন। আর নানু শোনাতেন রূপকথার গল্প। আমি চোখ বড় বড় করে শুনতাম।
মাঝে মাঝে ভয় পেতাম, আবার কখনো এত হাসতাম যে পুরো বাড়িতে হাসির রোল পড়ে যেত।
আজ গ্রামের সব বাড়িতেই বিদ্যুৎ আছে। বিদ্যুতের আলোয় জ্বলজ্বল করে চারদিক। কিন্তু সেই গল্পের আসর নেই, দাদাও নেই।
নানুর কাছ থেকেও শোনা হয় না রূপকথার গল্প। রূপকথার মানেই ছিল আমার জন্য এক রঙিন স্বপ্নের জগৎ। রাজপুত্র, রাজা-রানি, সাহসী মানুষ আর দৈত্যদের নিয়ে গড়া এক কল্পনার রাজ্য।
দাদার রাক্ষসের গল্পগুলো ছিল সবচেয়ে মজার। দাদা বলতেন, একদিন রাতে রাক্ষস নাকি গ্রামে ঢুকে পড়েছিল। তার ভারি পায়ের শব্দে পুরো গ্রাম কেঁপে উঠেছিল। কিন্তু শেষমেশ এক সাহসী বালক তাকে হার মানিয়েছিল।
এগুলো শুধু গল্প ছিল না, আমাদের শিখিয়েছিল সাহস কাকে বলে, বুদ্ধি দিয়ে কীভাবে বিপদ মোকাবিলা করা যায়।
আজ আর কেউ মুখে মুখে গল্প বলে না। হারিয়ে গেছে রূপকথার সেই কল্পনার ডানা। আমার শৈশবের সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতিরা হারিয়ে যাচ্ছে নিঃশব্দে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: সিরাজগঞ্জ।