বইয়ের বাইরে নানা বিষয়ে গল্প করতেন, শেখাতেন জীবনবোধ ও আত্মবিশ্বাসের পাঠ।
Published : 05 Oct 2025, 06:57 PM
শিক্ষকদের কেউ কেউ অজান্তেই আমাদের জীবনে অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠেন। আমারও তেমন একজন প্রিয় শিক্ষক আছেন। তিনি হলেন মাহাবুব আলম স্যার।
আমি প্রথম তাকে পাই বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকায় যখন আমি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তাম। তিনি ছিলেন আমাদের ইংরেজি শিক্ষক। স্যার খুব আনন্দের সঙ্গে পড়াতেন।
বইয়ের বাইরে নানা বিষয়ে গল্প করতেন, শেখাতেন জীবনবোধ ও আত্মবিশ্বাসের পাঠ। তার ক্লাসে আমি শিখেছি পরীক্ষায় ভালো করার কৌশল, উত্তর লেখার সঠিক ধরন, আর এমন অনেক বাস্তবমুখী শিক্ষা যা এখনো কাজে লাগে।
স্যারের উচ্চারণ ছিল স্পষ্ট, ইংরেজি বলার ভঙ্গি ছিল সাবলীল। তার অনুকরণে আমিও ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টা করতাম। ধীরে ধীরে ইংরেজি শেখার প্রতি গভীর আগ্রহ জন্মায় আমার মধ্যে।
২০২১ সালে, আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়, স্যারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড লিটেরেচার ক্লাব’। আমি তখন ক্লাবের সদস্য হিসেবে যোগ দিই। সময় গড়িয়েছে, এখন আমি সেই ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।
এই দীর্ঘ চার বছরে স্যারের কাছ থেকেই শিখেছি কীভাবে নেতৃত্ব দিতে হয়, কীভাবে চাপের মাঝেও স্থির থাকতে হয় আর কীভাবে অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে হয়।
স্যার সবসময় আমাদের পাশে থেকেছেন। ক্লাবের কাজের জন্য তিনি নিজের বিশ্রামের সময়ও ব্যয় করেন। শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও প্রয়োজনের ব্যাপারে তিনি আন্তরিকভাবে সাহায্য করেন। তার এই নিবেদন ও ভালোবাসা দেখে আমরা সবাই অনুপ্রাণিত হই।
আমাদের স্কুলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয় পহেলা মার্চ। এদিন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা একদিনের জন্য শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে। এ বছর আমি মাহাবুব স্যারের জায়গায় তার ক্লাসে পাঠদানের সুযোগ পাই।
স্যারের চেয়ারে বসে শিক্ষার্থীদের সামনে দাঁড়ানো ছিল আমার জীবনের এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। মনে হচ্ছিল, আমি যেন স্যারের মতই জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছি।
এখন আমি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী, এবং মাহাবুব আলম স্যার এখনো আমার ইংরেজি শিক্ষক। তার আন্তরিকতা, দায়িত্ববোধ ও শিক্ষার প্রতি ভালোবাসা আগের মতই অটুট।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৪। জেলা: ঢাকা।