দেয়ালে বুলেটের আঘাতের চিহ্ন, লুটপাট হওয়া ঘরের ছবি, গুলিতে ক্ষত-বিক্ষত আসবাবপত্রের সঙ্গে গা শিউরে উঠা রোমহর্ষক কাহিনী। না, কোনো হরর সিনেমার দৃশ্যপট নয় এটি। এটি ধানমণ্ডি বত্রিশ নম্বরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির চিত্র।
Published : 16 Aug 2015, 10:39 AM
এই বাড়িটি আজীবন বাঙালি জাতিকে লজ্জা দিতে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকবে এখানে।
ঘাতকের গুলির আঘাতে এ বাড়ির সিড়িতেই লুটিয়ে পড়েছিলেন শেখ মুজিব। সিড়ি ঘিরে উৎসুক দর্শনার্থীদের ভিড়। তাদের চোখেমুখে আফসোসের ছাপ। কথাবার্তায় আক্ষেপের সুর।
দেয়ালে সাঁটিয়ে রাখা হয়েছে ১৫ অগস্টে নিহতদের ছবি, স্মৃতি আর ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত আসবাবপত্র, দুটি টেলিফোন, আলমারি, টেবিল। আর ভেতরের ঘরগুলোতে আছে গুলির চিহ্ন আর রক্তের দাগ।
নিচ তলার বসার ঘরে সোফায় নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতেন তিনি। এসব দেখে আমার চোখে জল আর গা শিউরে উঠছিল।
শেখ জামালের কক্ষে ছিল তার সামরিক বাহিনীর পোশাক। একটি বুকশেলফ, খাট ও তার স্ত্রীর সাদা-কালো ছবি। উপরের তলায় তাদের পড়ার ঘর। তিনি গান-বাজনা ভালোবাসতেন বলে সেখানেই ছিল সেতার আর পিয়ানো।
পড়ার ঘরে আছে শেখ রাসেলের স্মৃতি বিজড়িত খেলনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কক্ষটি আছে তালাবদ্ধ অবস্থায়। আর বাড়ির ছাদে শেখ কামালের কক্ষ। রান্নাঘরে রয়েছে থালা-বাসন, বেসিন আর হাঁড়ি-পাতিল। হুট করেই আমার মনে হল ইস! এখনি যদি কেউ এগুলো নিয়ে কাজ করা শুরু করত তাহলে কত ভালো হতো।
"আমি দুনিয়ার কাছে সাহায্য আহ্বান করছি। আমি সাহায্য চাই। কিন্তু স্বাধীনতা বিক্রি করে সাহায্য চাই না।"- বঙ্গবন্ধুর এমন বেশ কয়েকটি উক্তি বাঁধাই করে রাখা আছে সম্প্রসারিত জাদুঘরে। হোয়াইট হাউজের নিমন্ত্রণ পত্রটিও রয়েছে সংরক্ষিত। তর্জনী তুলে ভাষণ দেয়ার ছবিটিও রয়েছে দেয়ালে বাঁধানো।
ছাদে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর পাঠাগার। যেখানে তিনি অফিসের বিভিন্ন কাজও করতেন।
সবকিছুই রয়েছে, কিন্তু নেই বঙ্গবন্ধু। তার স্মৃতি জড়িত আসবাবপত্র আর ছবি দেখেই যেন নিজেদের সান্ত্বনা পাচ্ছিলাম আমরা।