বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০০১ সাল থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি 'সুন্দরবন দিবস' হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
Published : 14 Feb 2022, 04:45 PM
বঙ্গোপসাগরের উপকূলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শ্বাসমূলীয় বনভূমি সুন্দরবন। এখানকার প্রতিটি গাছের শ্বাসমূল রয়েছে। যার কারণে একে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বলা হয়। সুন্দরবনের নামকরণ করা হয় এখানের সুন্দরী গাছের নামানুসারে।
বাংলাদেশের বাগেরহাট, খুলনা এবং সাতক্ষীরা জেলা ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত এই বন। ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ বনের ছয় হাজার বর্গ কিলোমিটারের বেশি বাংলাদেশ অংশে।
সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও চিত্রা হরিণ, কুমির, সাপ নানান নানান প্রজাতির পাখিসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণির আবাসস্থল এই সুন্দরবন। এছাড়াও রয়েছে সুন্দরী, গরান, গেওয়া, কেউড়াসহ অনেক প্রজাতির গাছ।
আন্তর্জাতিক রামসার কনভেনশন অনুযায়ী ১৯৯২ সালে সুন্দরবনকে ‘রামসার স্থান’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এরপর ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় নথিভূক্ত করে।
প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতবিক্ষত হয়ে মায়ের মতো উপকূলের কোটি-কোটি মানুষকে নিরাপদে রাখলেও সুন্দরবন এখন নিজেই ভালো নেই। জলবায়ুর পরিবর্তনে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, পরিবেশ দূষণ, চোরা শিকারি ও কাঠ পাচারকারীদের কারণে এর অস্তিত্ব এখন সংকটে।
সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি ও এর গুরুত্বকে বিস্তৃতির লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন হয়। সেই সম্মেলনেই ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়।
সেই থেকেই প্রতি বছর ১৪ই ফেব্রুয়ারি 'সুন্দরবন দিবস' পালিত হয়ে আসছে।