বগুড়ায় এসে কেউ প্রাচীন বাংলার রাজধানী পুণ্ড্রনগরী তথা মহাস্থানগড় না দেখে ফেরেন না। এছাড়া এখানকার দইয়ের কথা তো সবাই জানেন। এরমধ্যেই আরেকটি জিনিস যোগ হয়েছে তা হলো ‘কটকটি’।
Published : 12 Sep 2018, 06:00 PM
কটকটি দেখতে চারকোণা বিস্কুট আকৃতির শুকনো মিষ্টি জাতীয় খাবার। এটি এখন মহাস্থানের ঐতিহ্যের একটি অংশও।
মহাস্থানের কটকটি বিভিন্ন জেলার মানুষের কাছে এখন প্রিয় খাবার, কিন্তু মহাস্থান ও এর আশপাশের মানুষের কাছে তা অর্থনৈতিক উন্নয়নের উপায়।
স্থানীয় বিক্রেতারা জানান, সপ্তাহের অন্য দিনের তুলনায় শুক্রবার কটকটি বেশি বিক্রি হয়। প্রতিদিন এখানে গড়ে প্রায় লাখ টাকার কটকটি বিক্রি হয়।
এ জন্য মহাস্থানেই স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠেছে অনেক কটকটি তৈরির কারখানা। হযরত শাহ সুলতান মাহীসওয়ার বলখী (রহ.)-এর মহাস্থানে আগমনের পর এখানে প্রাচীন সভ্যতার বিলুপ্তি ঘটে। তার মৃত্যুর পর এলাকার মানুষ তার মাজারে নিয়মিত জিয়ারত করতে যান। সেই সময় থেকেই মহাস্থানের কটকটির প্রচলন শুরু হয়।
কটকটি নামটি কেনো জানতে চাইলে স্থানীয় প্রবীন ব্যবসায়ী লাল মিয়া বলেন, “কটকটি আমার বাপ-দাদার আমল থেকে বানানো হয়। সে সময় চালের আটা পানিতে মেখে খামির তৈরি করার পর তা বর্গাকারে কেটে কড়া রোদে শুকানো হতো।
“ভালোভাবে শুকিয়ে যাওয়া দ্রব্যকে স্থানীয়ভাবে ‘কটকটা’ শুকনা বলা হয়। যেহেতু ছোট ছোট বর্গাকার খামিরও কটকটা হয়ে যেত, তাই এর নাম দেওয়া হয় কটকটি।”
কটকটি কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, “আমি এখানে মাজার জিয়ারত করতে এসেছি। কটকটি কিনছি বাসায় ছেলে মেয়ে আছে তাদের জন্য। কটকটি পেলে তারা খুশি হবে।”
মহাস্থানের প্রসিদ্ধ কয়েকটি কটকটি বিক্রয়কেন্দ্র হলো ‘লালমিয়ার কটকটি, ‘হামু মামা কটকটি ঘর, ‘চায়না কটকটি, ‘জিন্না কটকটি ভাণ্ডার।
কটকটি তৈরির কারখানায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬০ মণ কটকটি তৈরি হয়। আর মহাস্থানের বাসস্ট্যান্ড, মাজার গেট, গড়, ঈদগাহ মাঠ, জাদুঘর ও ডাক-বাংলোর আশপাশের প্রায় ৫০টি ছোট-বড় দোকানে সেসব কারখানার কটকটি বিক্রি হয়।