জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৭তম জন্মদিন পালিত হল।
Published : 25 May 2016, 06:24 PM
১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলাম ধূমকেতুর মতো আসেন। সাহিত্যে তার অবদান লিখে শেষ করা যাবে না। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, প্রবন্ধসহ বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় তার অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি লেখার মাধ্যমে সামাজিক অবিচার ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। বিদ্রোহ করেছেন সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে, গেয়েছেন সাম্যের গান।
তার সম্পর্কে প্রথম জেনেছি আমাদের পাঠ্যবইয়ে। 'দুখু মিয়া' নামের এক গল্পের মধ্য দিয়ে তার সঙ্গে আমার পরিচিয়। কবির শৈশব সুখের ছিল না বলেই তাকে দুখু মিয়া নামে ডাকা হতো।
অনাথ নজরুল গ্রামের মক্তবে লেখাপড়া করতেন। পরিবারের ভরণ-পোষণেরর জন্য মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর সেখানেই শিক্ষকতা শুরু করেন। পাশাপাশি গ্রামের মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ নেন। এর কিছুদিনের মধ্যে তিনি যোগ দেন লেটো গানের দলে। লেটো দলে তৎকালীন রাঢ় বাংলা অঞ্চল বর্তমানের বর্ধমান-বীরভূমের কবিতা, গান ও নৃত্যের মিশ্র আঙ্গীক পরিবেশন করা হতো। ওই সময়ই কবিতা ও গান লেখার দক্ষতার জন্য পরিচিত হয়ে উঠেন তিনি।
১৯১০ সালে লেটো গানের দল ছেড়ে দিয়ে রাণিগঞ্জ সিয়ারসোল স্কুলে ভর্তি হন তিনি। এরপর মাথরুন স্কুলে ভর্তি হলেও আর্থিক অনটনের কারণে আসানসোলে রুটির দোকানে কাজ নেন।
দোকানে কাজ করার সময় আসানসোলের দারোগা রফিজউল্লাহর সঙ্গে তার পরিচয় হয় কবির। সেই দারোগা তাকে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালে দরিরামপুর স্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন।
এরপর ১৯১৭ সালের শেষ দিকে স্কুল ছেড়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন নজরুল। ১৯২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় আড়াই বছর তিনি এখানে কাজ করেন।
১৯২২ সালে প্রকাশিত হয় নজরুলের বিখ্যাত কবিতা 'বিদ্রোহী'। এজন্য তাকে কারাবরণ করতে হয়।
এরপর একে একে প্রকাশিত হতে থাকে তার গ্রন্থ অগ্নিবীণা, প্রলয়োল্লাস, আগমনী, খেয়াপারের তরণী, ছায়ানট, বিষের বাঁশি, বাউন্ডুলের আত্মকাহিনী, ব্যথার দান, ঘুমের ঘোরে, মৃত্যুক্ষুধা।
সংগীতেও তার অসামান্য প্রতিভা ছিল। তিনি চার হাজারের বেশি গান লিখেছেন।
মাত্র চল্লিশ বছর বয়সে কবি দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। দেশ স্বাধীনের পর কবিকে ঢাকায় এনে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ও জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। তার অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সম্মানসূচক ডি লিট উপাধি পান।
১৯৭৬ সালের ২৯ অগাস্ট কবি ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।