বাম হাতের কুনই থেকে নিচের অংশ নেই লালিমোহনের। তবু এক হাত দিয়েই রাজ মিস্ত্রির জোগালির কাজ করে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছেন তিনি।
Published : 15 Jun 2015, 02:52 PM
লালিমোহনের বয়স চল্লিশের কোঠায়। তিন ছেলেমেয়ের বাবা তিনি। এক হাতেই লড়াই করে চলেছেন তিন সন্তানকে পড়ালেখা করাতে।
তার বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের কোঠাপাড়া গ্রামে।
তিনি জানান, নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বই পাওয়া যায় কিন্তু দশম শ্রেণিতে প্রাইভেট কোচিং, ফরম ফিল আপের টাকা এসব খরচ তার পক্ষে বহন করা হয়ত আর সম্ভব হবে না।
“তবুও আমি যেমন করে পারি ওদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চাই,” জোর দিয়ে বলেন তিনি।
কষ্ট করে হলেও তিন ছেলেমেয়েকেই পড়ালেখা করাচ্ছেন। মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ছে। বড় ছেলে সপ্তম ও ছোট ছেলে পড়ে তৃতীয় শ্রেণিতে।
ছেলেমেয়েরা বড় ক্লাসে ওঠার পর খরচ আর কুলিয়ে উঠতে পারছেন না লালিমোহন।
নিজের বসতবাড়িটুকু ছাড়া কিছু নেই তার। দিনে তার রোজগার ১৫০ থেকে ২০০ টাকা আর সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা মাসিক ৫০০ টাকা। স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। এই টাকাতেই জোড়াতালি দিয়ে চলে সংসার খরচ আর তিন সন্তানের লেখাপড়া।
গরিব ঘরের ছেলে ছিলেন বলে নিজে তৃতীয় শ্রেণির পর আর লেখাপড়া করতে পারেননি। সেই দুঃখ পুষিয়ে নিতে চান ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে।
তার ইচ্ছে, কিছু টাকা জমাতে পারলে, নিজ-গ্রামে একটি মুদি-দোকান দেবেন। তখন তাকে আর এক হাতে এত কঠিন পরিশ্রম করতে হবে না। আর ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচও চালাতে পারবেন।