শিশুশ্রম ব্যাধির মতো ছড়িয়ে আছে বাংলাদেশে। বিভিন্ন বয়সে শ্রমজীবী অনেকেই আবার ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে।
Published : 31 Aug 2016, 06:55 PM
ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ১৪ বছরের কম বয়সি শিশুদের নিয়োগ দেওয়া আইনত নিষিদ্ধ হলেও হরহামেশা দেখা যায় বিভিন্ন কারখানায়, ময়লার ভাগাড়ে শিশুরা কাজ করেছে। এমন হাজারো চিত্র প্রতিদিন আমাদের চোখে পড়ে।
আমরা সবাই বলি, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কিন্তু সেই ভবিষ্যতকে প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা কতটা সচেষ্ট? আমরা কি তাদের গড়ে ওঠার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ দিচ্ছি? না দিচ্ছি না।
আমরা প্রতিদিন যেমন দেখি অনেক শিশু স্কুলে যাচ্ছে তেমনি একটু খেয়াল করলেই দেখব একই সময়ে অনেক শিশু কাজে যাচ্ছে।
সম্প্রতি এমনই একজন শিশুশ্রমজীবীর সাথে আমার কথা হয়।
ওর নাম হৃদয় হাসান। বাড়ি নেত্রকোণা সদরের মেদনী ইউনিয়নের টেংগা গ্রামে। বয়স ১২ পার হয়নি। এখনেই তাকে নেমে পড়তে হয়েছে জীবন যুদ্ধে।
কথায় কথায় জানতে পারলাম ওরা দুই ভাই ও এক বোন। ওর বাবা আব্দুল জব্বার ফেরি করে হাঁস মুরগি বেচেন। বড় ভাইকেও পেটের তাগিদে অনেক আগেই কাজে নামতে হয়েছে। এতেও পরিবারের অভাব না কমায় ওকেও কাজ করতে হয়।
ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে হৃদয়। ও বলে, "নিজের খাওয়া খরচের টাকা আমাকেই আয় করতে হয়। আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করে যা পাই তা বাড়িতে দিয়ে দেই।"
এ কাজ করে দিনে আড়াই শ' টাকার মতো আয় হয় ওর।
পড়ার সুযোগ পেলে আবার স্কুলে যাবে কি না জানতে চাইলে ও বলে, "আফা আমরা খুব গরিব। বাপ মায়ে খাওয়াইতে পারে না। তাই পড়াশোনা ছাইড়া টাকা কামাইতে নাইমা পড়ছি।
"যদি টাকা থাকতো তাইলে আমিও পড়ালেখা করতাম। আমারে যদি কেউ সাহায্য করতো তাইলে আমিও পড়ালেখা করতাম।"
হৃদয়ের মতো অনেক শিশুই আমাদের সমাজে আছে যারা এই বয়সেই কাজে নেমেছে পেটের তাগিদে। আমরা যদি শিশু অধিকার সম্পর্কে সচেতন হই তাহলে এই সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে।