পাঁচ মাস আগেও স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ত রাব্বি।
Published : 27 Nov 2023, 05:13 PM
শেরপুর শহরের বেশির ভাগ মোটর মেরামতের দোকান, ঝালাই কারখানায় শ্রমিক হিসেবে শিশুদের কাজ করতে দেখা যায়।
একদিকে হাতুরির ঠুং ঠাং শব্দ, অন্যদিকে ঝালাইয়ের কাজে ছিটকে আসা আগুনের ফুলকির মাঝেই বসে কোনো রকম নিরাপত্তামুলক ব্যবস্থা ছাড়াই কাজ করে চলেছে শিশুরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, তাদের কেউ কেউ উত্তপ্ত আগুনে পিতল গলানোর কাজ করছে, কেউ ঝালাই করছে।
শহরের একটি ঝালাই কারখানায় কাজ করে ১৪ বছর বয়সী ইমরান। কাজের এক ফাঁকে কথা হয় তার সঙ্গে।
সে জানায়, চার বছর ধরে এখানে কাজ করছে। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে এক রকম বাধ্য হয়েই কাজে যোগ দিয়েছিল সে।
ইমরান আরও জানাল, সেই পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। মাস শেষে যে পাঁচ হাজার টাকা বেতন পায় তা দিয়েই সংসার চলে তাদের।
শহরের বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে একই চিত্র দেখা গেল।
করোনাকালীন বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেলে পড়াশোনা ছেড়ে কাজে যোগ দেয় ১২ বছর বয়সী রাকিব। রাকিব হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে, “স্কুলে যাইতে ইচ্ছা করে, কিন্তু কারখানা বাদ দিয়া যাওনের উপায় নাই।”
পাঁচ মাস আগেও স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ত রাব্বি। কিন্তু রিকশাচালক বাবা অসুস্থ হওয়ায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়লে পড়াশোনা ছেড়ে কাজ নিতে বাধ্য হয় সে।
রাব্বি বলে, “কাম না করলে খামু কী? বেহেরই (সবাইকে) না খাইয়া থাকন লাগব।”
রাব্বির মতো একই দশা একটি গাড়ির যন্ত্রাংশ মেরামতকারী দোকানে কাজ করা রায়হানেরও। ১৩ বছর বয়সী রায়হান জানায়, সাধারণত সে ব্যাটারি ও ইঞ্জিনের কাজ করে থাকে।
কথা হলো একটি দোকানের মালিক হারুন মিয়ার সঙ্গে। তিনি বললেন, কাজ করা শ্রমিকদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
এসব শিশুদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কাজ করতে হয় তাদের।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: শেরপুর।