প্রদীপের মামা দামোদর কৃষ্ণ দাস সবসময় তার কাজে উৎসাহ দেন।
Published : 06 May 2025, 08:16 PM
তিন বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারান কীর্তনীয়া প্রদীপ কৃষ্ণ দাস নামে কুড়িগ্রামের এক তরুণ। চোখের আলো না থাকলেও হারাননি ইচ্ছাশক্তি। সংগীতে প্রশান্তি খুঁজে পেয়ে একে করেছেন জীবিকার মাধ্যম।
প্রদীপের বাড়ি কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের গোপালের খামার গ্রামে। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
প্রদীপের মা পার্বতী দেবী দাসী হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিন বছর বয়সে পেট ও মাথাব্যথা হয়েছিল। কবিরাজি ও ভুল চিকিৎসার কারণে চোখের দৃষ্টি হারায়। ছোটবেলায় সে মন খারাপ করে থাকত। পরে দেখি সংগীতের প্রতি তার আগ্রহ।”
জানা যায়, পাঁচ বছর বয়সে মায়ের কাছ থেকে একটি ভাঙা হারমোনিয়াম পেয়ে তা শিখেছেন নিজে নিজেই। এরপর শেখেন বাঁশি বাজানো। সেই থেকে তিনি নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন সাধু সংঘ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। এসব আয়োজনে একাই বাজান হারমোনিয়াম, বাঁশি, মৃদঙ্গ, ঢোলসহ নানা বাদ্যযন্ত্র।
প্রদীপের মামা দামোদর কৃষ্ণ দাস সবসময় তার কাজে উৎসাহ দেন।
তিনি হ্যালোকে বলছিলেন, “ভাগ্নেকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাই। ও লোকগান ভালো গায়। আগের মত অনুষ্ঠান না থাকলেও মাসে দুই-তিনটা অনুষ্ঠান হয়। সেই আয় দিয়েই ও চলে এবং বাবা-মাকেও সহযোগিতা করে।”
প্রদীপের বাবা লক্ষণ কৃষ্ণ দাস বলেন, “চোখের ডাক্তার বলেছেন, দেশের বাইরে ভালো চিকিৎসা পেলে সে আবার দেখতে পেতে পারে।”
প্রদীপের বন্ধু হাসান রানা বলেন, “পড়ালেখা না করলেও দৃষ্টিহীনতা জয় করে প্রদীপ আমাদের শিখিয়েছে, সমাজে টিকে থাকতে ইচ্ছাশক্তিই সবচেয়ে বড় শক্তি।”
প্রদীপের প্রসঙ্গে সদর উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা এস এম হাবিবুর রহমান হ্যালোকে বলেন, “বিষয়টি আমরা অবগত হলাম। খোঁজ নিয়ে তার চিকিৎসার বিষয়ে সহযোগিতার চেষ্টা করব।”
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: কুড়িগ্রাম।