'তবে সে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে আমার ছোট বোন আরুফাকে।'
Published : 16 Apr 2025, 07:31 PM
সময়টা ছিল ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস। একদিন হঠাৎ করেই বাসার ফটকের সামনে এসে দাঁড়ায় একটি সুন্দর বিড়াল। তার ভাব আর আচরণে বুঝে গিয়েছিলাম, সে কতটা শান্ত আর ভদ্র।
আম্মু দেখার পরই বললেন, এটি কারো পোষা বিড়াল। সে সম্ভবত পথ ভুল করে এখানে চলে এসেছে।
এরপর আমরা তাকে বাসায় নিয়ে আসি। এই অতিথির জন্য ভাত-মাছ মেখে প্রস্তুত করে এনে খেতে দিই। সে খুবই শান্তভাবে খাবারটি খেয়ে নেয়।
এরপর আশেপাশের এলাকায় বিড়ালটির মালিকের খোঁজ করা হলেও কেউই তাকে নিজেদের বলে দাবি করেনি। এরই মধ্যে পরিবারের ছোটরা, বিশেষ করে আমি ও আমার ছোট বোন অতিথির সঙ্গে খুব সহজেই বন্ধুত্ব করে ফেলি।
অবসরে আমরা তার সঙ্গে সময় কাটাই, কখনো বল দিয়ে খেলায় মেতে উঠি, কখনোবা রশি দিয়ে খেলা করি। পরিবারের অন্য সদস্যদের ভালোবাসাও সে অর্জন করতে থাকে। ফলে রোজ বাড়ির অন্যদের পাশাপাশি তার জন্যও আলাদা খাবার বরাদ্দ করে রাখা হয়।
কয়েকদিনের মধ্যেই বিড়ালটি আমাদের পরিবারের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। তাই পরিবারের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাকে একটি সুন্দর নাম দেওয়া হবে। আমার মতের ভিত্তিতে তার নাম রাখা হয় 'টুকটুকি'। কিছুদিন ডাকতেই নামটির প্রতি তার প্রতিক্রিয়া দেখে পরিষ্কার বোঝা যায়, সে নিজের নামটি বুঝে ফেলেছে।
টুকটুকি সাধারণত বাড়িতেই সময় কাটায়, তবে মাঝে মাঝে আশেপাশে একটু ঘুরতে বের হয়। পরিবারের সবার মধ্যেই তার প্রতি অনেক ভালোবাসা, তবে সে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে আমার ছোট বোন আরুফাকে। আরুফা ডাকলেই সে গিয়ে তার কোলে বসে পড়ে।
টুকটুকির প্রিয় খাবারের তালিকায় রয়েছে—দুধ ভাত, মাছ এবং মুড়ি। এসবের পাশাপাশি অন্যান্য খাবারও টুকটুকি বেশ আনন্দের সঙ্গে খেয়ে থাকে।
আজ টুকটুকি অনেক বড় হয়ে গেছে। সেই হঠাৎ করে আসা অপরিচিত বিড়ালটি এখন আমাদের পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের মত। সবাই তাকে খুব ভালোবাসে, যত্নে আগলে রাখে।
এখন সে শুধু একটি সাধারণ বিড়াল নয়, বরং আমাদের পরিবারের জন্য ভালোবাসার এক নিঃশব্দ প্রতীক।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: জামালপুর।