
চলতি বাসে যাত্রীদের গান শোনাচ্ছেন বাউল শিল্পী মোহম্মদ রাসেল।
রাজধানীর বনানী থেকে খামারবাড়ি আসার পথে বাসে এক বাউল শিল্পীর সঙ্গে দেখা হলো। দিনটি শুক্রবার হওয়ার কারণে বাসে ভিড় ছিল কম।
নিজেকে বাউল শিল্পী পরিচয় দিয়ে গাইতে থাকলেন লালনের গান। যাত্রীদের জানালেন, তার নাম মোহম্মদ রাসেল। গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া।
হাতের একতারা আর বাঁয়ার মতো এক বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গাইলেন বাড়ির কাছে আরশী নগর, সব লোকে কয় লালন কী জাত, ধন্য ধন্য বলি তারে গানগুলোসহ আরও বেশ কিছু গান। সুরের মূর্ছনায় অনেক যাত্রী চোখ বুজে গান শুনলেন। মোবাইলে ব্যস্ত থাকা যাত্রীদের কেউ কেউ কান থেকে হেডফোন বা এয়ার পড খুলে নিয়ে বাউল রাসেলের গানে মনযোগ দিলেন।
নিজের সম্পর্কে রাসেল বললেন, “জন্ম নিয়েই দেখেছি বাবা গান গায়। তার গলায় ছিল সুর আর সংসারে ছিল অভাব। সেই থেকে সুর আর অভাবের সঙ্গে যে ভাব হইলো, কারো সঙ্গে আর ভাব হইলো না। সুর মনের ক্ষিদা মিটায়। কিন্তু অভাব পেটের ক্ষিদা বাড়ায়।”
বাউল রাসেল আরও বলেন, সংসারে মন ছিল না বলে জায়গা জমি তেমন কিছু নাই তার। গান ছাড়া আর কিছুই শেখেননি জীবনে। সংসার নেই তবুও গান গেয়ে তার পেট চলে না। আগে শীতের সময় গ্রামাঞ্চলে গান গেয়ে রোজগার হতো। এখন কেউ আর ডাকে না।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন “ইউটিউব, ইন্টারনেট সব দখল করে নিছে। বাউল ডেকে কেউ গান শোনে না। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় আর বাউলই থাকবে না।”
গান শেষে তিনি সবার কাছে সহযোগিতা চান। তার কাছে তাকে নিয়ে লেখার অনুমতি চাইলে বলেন, “লিখেন। কিন্তু ভিক্ষুক বানাইয়েন না। আমি একজন বাউল।”
প্রতিবেদকের বয়স: ১২। জেলা: ঢাকা।