‘চরের এই ৫০ পরিবারের শিশুদের জন্য এখন নেই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। চিকিৎসার জন্যেও গড়ে উঠেনি কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র।’
Published : 21 Mar 2024, 04:30 PM
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত চর বাসুদেবপাশায় শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য নেই কোনো স্কুল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র। দুই বছর আগে স্কুল থাকলেও নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় বলে জানায় স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৫ সাল থেকে এই অঞ্চলে মানুষের বসবাস শুরু হয়। মানুষের বসতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানে গড়ে ওঠে মসজিদ, বিদ্যালয় ও বাজার। কিন্তু নদী ভাঙনের কবলে সবই বিলীন হয়ে গেছে। চরে টিকে আছে শুধু ৫০টির মতো পরিবার।
চরের এই ৫০ পরিবারের শিশুদের জন্য এখানে নেই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। চিকিৎসার জন্যেও গড়ে উঠেনি কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র।
কৃষি কাজ ও মাছ ধরা এই চরের বাসিন্দাদের একমাত্র পেশা। তবে সন্তানদের পড়াশোনা করিয়ে ভিন্ন পেশায় নিতে চাইলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবে সেই সুযোগ মিলছে না বলে অভিযোগ করেন তারা।
শাহিনুর বেগম নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাচ্চাগো আমরা শিক্ষিত করতে পারছি না। আমরা যেমন চাষার কাজ করি, আমাগো ছেলেরাও চাষার কাজই করে। আমরা যেমন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হইলাম, আমাদের বাচ্চাদেরও বঞ্চিত করমু?”
রাজিয়া বেগম নামের স্থানীয় আরেক নারী হ্যালোকে বলেন, “গুরাগারা (শিশুদের) পড়াইতে পারি না। চরের সবাই জেলে ও চাষা। কারো কিছু নেই।”
“শিশুরা অনেক রোগে আক্রান্ত হয়। তাদের নিয়ে কোথাও যাইতে পারি না। চরে কোনো হাসপাতাল নাই। যাওয়া লাগে ওপার। ট্রলার পাইলে যাইতে পারি নাইলে পারি না,” বলেন রুজিনা বেগম নামের আরেক নারী।
এ বিষয়ে ধুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির হ্যালোকে বলেন, “এখানে আগে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল। দুই বছর হলো নাই। নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।”
বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী হ্যালোকে বলেন, “আমরা চরটি ভিজিট করে বিশুদ্ধ পানির জন্য একটি টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করেছি। শীঘ্রই শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
“যেহেতু এটি একটি বিচ্ছিন্ন চর তাই এখানের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো নয়। আমরা একটি ট্রলারের ব্যবস্থা করব, যা নির্দিষ্ট একটি সময়ে চলবে,” যোগ করেন তিনি।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: পটুয়াখালী।