বছরের প্রথম দিনে বই হাতে পেয়ে খুশিতে আটখানা সবাই। প্রতি বছরের মতো এবারও স্কুলে স্কুলে হয়েছে বই উৎসব।
Published : 07 Jan 2017, 05:10 PM
এটি আমার কাছে একটি দারুণ বিষয়। কিন্তু এবারের কিছু বইয়ে এমন কিছু ভুল চোখে পড়েছে যা দেখে আমি রীতিমতো হতবাক।
একটা ভুল দেখলাম তৃতীয় শ্রেণির বইয়ে। হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার ইংরেজি ভার্সনের বইয়ের পেছনের পাতায় লেখা 'DO NOT HEART ANYBODY'. লেখাটা পড়ে বেশ চমকে গেলাম। তারপর বুঝলাম গণ্ডগোলটা কোথায়। এখানে আসলে কাউকে আঘাত না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এটি আসলে হবে 'DO NOT HURT ANYBODY'.
একই শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে আরেকটা ভুল দেখলাম। কবি কুসুমকুমারী দাশ রচিত ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতার প্রথম পংক্তি হলো, ‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে’। কিন্তু বইয়ে লেখা ‘আমাদের দেশে সেই ছেলে কবে হবে’।
পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইতে দেখলাম কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘সংকল্প’ কবিতায় "পাতাল ফেঁড়ে নামব আমি, উঠবো আমি আকাশ ফুঁড়ে"- এর জায়গায় লেখা হয়েছে "পাতাল ফেঁড়ে নামব নিচে, উঠবো আবার আকাশ ফুঁড়ে।"
সপ্তম শ্রেণির বাংলা বইতেও দেখলাম ভুলের ছড়াছড়ি। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যবর্তন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি হলেও বইয়ে লেখা ১৯৭১ সালের ১০ জানুয়ারি। ভুল রয়েছে ‘বাংলাদেশের হৃদয়’ ও ‘অপূর্ব প্রতিশোধ’ কবিতাতেও। এছাড়া বানান ভুল তো রয়েছেই।
আমি যখন অষ্টম শ্রেণিতে ছিলাম তখন ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বই স্কুলের সবাই পেয়েছিল বেশ দেরিতে। বইয়ের মাঝের বেশ কিছু পৃষ্ঠা নেই। এরপর দেখি সবারই এক অবস্থা। ঘটনাটা গত বছরেরই।
হঠাৎ করে মনে হলো এ বইগুলোতে ভুল-ভ্রান্তি হয়েছে কিনা তা কি যাচাই করা হয়নি? এসবের দায়িত্বেই বা কে আছেন? কারো কি কিছুই করার নেই। বই মুদ্রণে টুকটাক ভুল হতে পারে। কিন্তু এত বড় বড় ভুল কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।
বছরের প্রথম দিনে বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়াটা দারুণ এক ব্যাপার। বই তৈরি করার ক্ষেত্রে যদি থাকে আন্তরিকতার অভাব, তাহলে সেই দারুণ ব্যাপারটা পরিণত হয় হতাশায়। আশা করি ভুলগুলো শুধরে সবার কাছে সংশোধনী দ্রুত পৌঁছে দেওয়া হবে। এরপর থেকে যেন এরকম ভুল পাঠ্যবইয়ে না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখবেন সংশ্লিষ্টরা।