সব ধর্মের, বর্ণের মানুষ একসঙ্গে মিলেমিশে থাকাই বাঙালির ঐতিহ্য। এদেশে যুগ যুগ ধরে সবাই এভাবেই বসবাস করছে। কিন্তু এর মধ্যে কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে ভেদাভেদ তৈরি করছে।
Published : 18 Nov 2016, 02:52 PM
সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য পরিকল্পিতভাবেই ঘটাচ্ছে এসব ঘটনা। ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরে ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননাকর একটি ছবি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে প্রায় শতাধিক হিন্দু পরিবারে হামলা চালানো হয়। পড়ে জেনেছি ফেইসবুক পোস্টের ঘটনাটাও সাজানো। এতে ঘর-বাড়ি, মন্দির ভাংচুর এবং লুটপাট করা হয়। যা সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবেই ঘটানো হয়েছে বলে মনে হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রকাশিত অনুসন্ধান প্রতিবেদনটি পড়ে আমি অবাক হয়েছি। মনে হয়েছে এখানে রাজনৈতিক কারণ বিদ্যমান।
একশ্রেণির মানুষ বরাবরই ধর্মকে অপব্যবহার করার চেষ্টা করছে। ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টির মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। কিন্তু কথা হচ্ছে, এই সংকট থেকেই যাবে নাকি মোকাবেলা করা হবে? ধর্ম মানুষের ব্যক্তিগত চর্চার বিষয়, রাজনীতির বিষয় নয়। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি আমাদের নিজেদের জন্যই অশান্তির। এ সত্য মানুষকে বোঝাতে হবে।
আমাদের এই জনগোষ্ঠীর উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে থাকবে ধর্মের সঠিক শিক্ষা। ধর্মের নামে অন্যকে হেয় করা, হত্যা করা কতটা অযৌক্তিক তা বোঝাতে হবে।
আর ধর্মকে ধর্মের জায়গায় রেখেই দেশকে পরিচালনা করতে হবে। এতে করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধনটা আরও সুদৃঢ় হবে।
সাম্প্রতিক এসব ঘটনাগুলোকে বিচ্ছিন্ন বলার অবকাশ নেই। এসব ঘটনার নেপথ্যে কারা তা দেশের মানুষ তা দেখতে চায়। ঘটনাগুলোর সুষ্ঠ তদন্তের পাশাপাশি জড়িতদের আওতায় এনে শাস্তির দিতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী এসব আগ্রাসন রুখতে সরকারের পাশাপাশি সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন।
সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠুক, যেখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ পাবে তাদের সমঅধিকার। সবাই মিলে গাইবে শান্তির জয় গান।