আমার খালাতো ভাইয়ের নাম চেখভ পলল। ও আমার বন্ধু, ভাই সব কিছু।
Published : 30 May 2016, 06:13 PM
২০০৬ সালের ২৮ এপ্রিল রাতে ওর জন্ম হয়। সেদিন আমি এতো খুশি হয়েছিলাম যে লিখে বোঝানো যাবে না। আমার অন্য আপুদের তুলনায় ওকে সবচেয়ে বেশি সময় দিয়েছি আমি।
ওরা ঢাকায় থাকে। আমি যখন ওদের ওখানে বেড়াতে যাই খুব মজা হয়। আমরা একসঙ্গে ঘুরি, গল্প করি।
লিখতে বসে ওকে নিয়ে অনেক ঘটনা মনে পড়ছে। তবে একবারের কথা বেশ স্মরণীয়। আমি তখন তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তাম বোধহয়। চেখভ অনেক ছোট ছিল। ওদের বাসার নিচে রোজ একটি কুকুর আসতো। আমাদের দুজনের সেকি ভাব কুকুরটার সঙ্গে। নিজেদের খাবার থেকে ওর জন্য খাবার বাঁচিয়ে রাখতাম। খালামণিও ওকে খাবার দিত। কিন্তু আমাদের তাতে মন ভরত না। নিজেদের খাবারই ওকে দেওয়া চাই। ওর নাম রেখেছিলাম কুতুব মিঁঞা।
কিছুদিন বেড়িয়ে আমি চট্রগাম চলে আসি। মাঝে মাঝে ফোন দিয়ে কুতুবের খবর নিতাম ভাইয়ের কাছে। একদিন শুনলাম ও আর আসে না। এর কিছুদিন পর আমরা আবার ঢাকায় যাই। তখন আর চেখভ দুজনে মিলে কুতুবকে খুব খুঁজেছি কিন্তু পাইনি।
সেবারই একদিন সন্ধ্যায় আমি আর ভাই গেছি বাসার নিচের দোকানে। হঠাৎ দেখি আমাদের পেছনে কুতুব দাঁড়িয়ে আছে। এটির মাথা থেকে রক্ত ঝরছে। কুতুব চুপচাপ আমাদের পেছনে পেছনে কিছুক্ষণ ঘুরঘুর করল। আমরা ওকে বাসা পর্যন্ত আনার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। সেদিনই কুতুবের সঙ্গে আমাদের শেষ দেখা। ভেবে অবাক হলাম ও আমাদের চিনতে পেরেছে! শুনেছি কুকুর প্রভু ভক্ত প্রাণি। সেদিন নিজের চোখে দেখলাম।
এমন অনেক কাজ আমি আর চেখভ মিলে করেছি। ওর সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক আমার সঙ্গে। তবে আমাকে ও ভয় পায় বেশি। মাঝে মাঝে আমাদের ঝগড়াও হয়। রাগ করে কয়েক দিন কথা বলাও বন্ধ থাকে। পরে নিজেই ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চায়।
মাঝে মাঝে ভয় হয় বড় হলে আমাদের এই ভালো সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে না তো? কত কিছুই তো বদলে যায়।
যাইহোক কদিন পর ওরা চট্টগ্রাম আসছে। খুব মজা হবে। আমরা খুব ঘুরব, আনন্দ করব। আহা কি আনন্দ!