বাঙালি জাতির আরেক কলঙ্কের দিন ৩ নভেম্বর। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মানব সভ্যতার ইতিহাসকে ম্লান করে কারাগারের অন্ধকার ঘরে জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
Published : 03 Nov 2015, 07:59 AM
মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। তখন যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামান। তারা আমাদের জাতীয় চার নেতা।
জাতিকে মেধাশূন্য করতে ৭১’এর ১৪ ডিসেম্বর ঘটেছিল বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড। এরপর বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার লক্ষ্যে ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জাতীয় চার নেতাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। এরপর এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী অবস্থায় তাদের হত্যা করা হয়।
হানাদার বাহিনী ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করলে আন্দোলন বন্ধ হয়ে যাবে। বাঙালি পিছু হাঁটতে বাধ্য হবে। কিন্তু ঠিক সে সময় যুদ্ধের হাল ধরেন এই চার নেতা। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব তুলে নেন নিজেদের কাঁধে।
চার নেতা না থাকলে আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন হয়ত অঙ্কুরেই শেষ হয়ে যেত। পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নির্মম গণহত্যা, অত্যাচার, নিপীড়নের চিত্র বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা, ভারতে পালিয়ে যাওয়া লক্ষ লক্ষ শরণার্থীর আশ্রয় সুনিশ্চিত করা, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের জন্য ভারতকে রাজী করান, শেষ পর্যন্ত ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সহায়তায় দেশ স্বাধীন করাসহ সব কাজ করেছেন সফলভাবে। তাদের পরিশ্রম আর ত্যাগে আমাদের আজকের এই স্বাধীনতা।
প্রতি বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে এই বীর সেনা ও চার জাতীয় নেতাকে যথাযথ শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশের ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এই কালো অধ্যায়টিকে স্মরণ করা হয়।