গ্রীষ্মের ছুটিতে ছোটদের অডিওবই
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে ‘অডিওবুকস ফর সামার ট্রিপস উইদ দ্য কিডজ’ নামে সোমবারে প্রকাশিত বই পর্যালোচনা বিভাগে বিখ্যাত সব অডিওবই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তোমরা যারা ইংরেজিতে বেশ দক্ষ, সরাসরি সাইটে গিয়ে জেনে নিতে পারো দেশবিদেশের শিশুতোষ বই সম্পর্কে।
আমেরিকান কমেডিয়ান ও চিত্র তারকা গ্রাওচো মার্কসের মতে, একটি বই একজন মানুষের সেরা বন্ধু।
বই মানুষের অবসরের অন্যতম সঙ্গী হতে পারে। যা তাকে কাছের বন্ধুর মতোই পরামর্শ দেয়, চিন্তার জগৎ বিকশিত করে। এমনকি শিশুদের সামাজিকীকরণেও বই খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তবে বর্তমান সময়ে বই পড়ার রীতি বা অভ্যাস বেশ কমে এসেছে। বড়দের কাছে গল্প শুনতে চাইলে বলেন, তারা ছোটবেলায় স্কুলের বইয়ের মধ্যে লুকিয়ে গল্পের বই পড়তেন। কিন্তু এখনকার শিশুদের আকর্ষণ, ভিডিও গেইম, মোবাইলফোন কিংবা ফেইসবুক। যার ফলে আগ্রহ কমে এসেছে বই পড়ার প্রতি অথচ বই পড়ার সুযোগ এখন আরও বিস্তৃত।
লাইব্রেরি থেকে বই না কিনেও ইন্টারনেটে অসংখ্য বইয়ের অনলাইন সংস্করণ, এনিমেটেড স্টোরি বা অডিও বুক পাওয়া যায়। যা সহজ আর আকর্ষণীয়। যা বিশেষ করে শিশুদের জন্য অবসর যাপন বা বিনোদনের মাধ্যম হতে পারে।
শুরুটা হতে পারে কবি ও লেখক হান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসনের সাথে পরিচয়ের মধ্য দিয়ে। তিনি একজন অনন্য শিশু সাহিত্যিক। তার লেখায় প্রাধান্য পেয়েছে শিশু-ভাবনা ও ভ্রমণ কাহিনী। তবে রূপকথার কাহিনীকার হিসেবে তিনি বেশি পরিচিত এবং শিশুদের কাছে খুব প্রিয়। তিনি সমগ্র জীবনে তিন হাজারেরও বেশি রূপকথা লিখেছেন। যেগুলি শতাধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। যাদের কল্পনা বা স্বপ্ন ভাললাগে তাদের জন্য ‘দ্য লিটল মারমেইড’, ‘দ্য স্নো কুইন’ এবং ‘দ্য প্রিন্সেস অ্যান্ড দ্য পি’, আকর্ষণীয় তিনটি গল্প।
একটি সংক্ষিপ্ত বইয়ের ভেতর অসাধারণ কিছু বিষয় তুলে ধরার অনন্য উদাহরণ কিশোর উপযোগী বই ‘দিস ইজ আওয়ার কন্সটিটিউশন’। বইটির লেখক, খিজির খান। এটি তার প্রথম বই এবং তিনি এখানে শিশুদের জন্য ন্যায় বিচার ও স্বাধীনতা বিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্য প্রকাশ করেছেন। যা তার ব্যক্তিগত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দ্বারা প্রভাবিত। তিনি সহজ সরল ভাষায় সংবিধান, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, দেশপ্রেম বিষয়ক বার্তা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেন। এটি এখন বেশ পরিচিত এবং অধিক হারে বিক্রিত বই।
‘টেস অব দ্য রোড,’ মার্কিন লেখক র্যাচেল হারটমানের একটি ফ্যান্টাসি উপন্যাস। ফ্যান্টাসি উপন্যাস গদ্যের একটি ভিন্ন ধারা। যেখানে অতি প্রাকৃতিক, অলীক কল্পনা নিয়ে বাস্তব বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে গল্প রচনা করা হয়।
উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্র, ‘টেস’। যে সর্বদা সমস্যার মুখোমুখি হয়। ধীরে ধীরে পারিবারিক জটিলতা তার উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। এরপর দুঃখ ও অনুশোচনা থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিজের ব্যক্তিত্বকে অন্যভাবে উপস্থাপন করে। ছেলের ছদ্মবেশে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে এবং অতীতের আতঙ্কের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেবার জন্য সংগ্রাম করে। সে নতুন একটি জীবনকে উৎঘাটন করে। এছাড়া সেখানে করুণা, সাহস, সম্মান, মানবতা, আত্মনির্ভরতা ও নারী ক্ষমতায়নের চিত্তাকর্ষক বাস্তবচিত্র ফুটে ওঠে।
একটি ছোট মেয়ের কিংবদন্তি হয়ে ওঠার স্বপ্ন ও গল্প নিয়ে রচিত হয়েছে হেনরি লিওনের ‘পিস্প্রাউট চেন।’ বইটিতে স্কেট ও মার্শাল আর্ট বা অসিবিদ্যার সমন্বিত পাঠের জন্য ১৪ বছর বয়সী লিও অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে নিজের যোগ্যতা ও সাহসিকতার পরিচয় দেয়। একসময় শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই, ভাইকে রক্ষা করা এবং অভিযোগের বিরুদ্ধে নিজেদের নির্দোষ হিসেবে প্রমাণ করে।
এছাড়াও পড়তে পারো, ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চার অব পিনোকিও’, ‘দ্য স্টোরি অব ম্যানকাইন্ড’, ‘দ্য ওয়াইল্ড রোবোট এস্কেপ’, ‘রাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইট্টি ডেইজ’, ‘গালিভার’স ট্রাভেলস’, 'লিটল মারমেইড' আরও অনেক শিশুদের প্রিয় বই।
তাই নিজেকে সমৃদ্ধ করতে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। এমনকি বই পড়লে বা শুনলেও মন ভালো থাকে এবং চিন্তামুক্ত থাকা যায়। রুটিনে বাঁধা সময়ের মধ্যেও ইচ্ছা করলেই বই পড়ার জন্য সময় বের করে নেওয়া যায়। তবে স্কুলছুটির দিনগুলো নতুন নতুন বই পড়ার যথার্থ সময়। সামনে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ, রোজা আর ঈদের লম্বা ছুটি। এই সময়টাকে পার করা যেতে পারে দারুণ কিছু বইয়ের সাথে।