শুনতে অবাক করা মনে হলেও, এমন কল্পনাই সত্যি হতে চলেছে অদূর ভবিষ্যতে। যার জন্য প্রচেষ্টায় কমতি নেয় যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট্স ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় (এমআইটি) গবেষক দলের।
বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি এক ধরণের ক্ষুদ্রকণা উদ্ভিদের পাতায় স্থাপন করার মাধ্যমে ক্ষীণ আলোর পরিবেশ সৃষ্টি করতে সফল হয়েছেন তারা। তাদের অফিশিয়াল পেইজে এমনই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন তারা।
প্রাথমিকভাবে ‘ওয়াটারক্রেস’ নামক এক প্রজাতির জলজ উদ্ভিদের উপর এই বিষয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য উদ্ভিদের ক্ষেত্রেও এটা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী গবেষকগণ।
এমআইটির নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত গবেষণা ফলাফল সম্পর্কিত প্রতিবেদনে তাদের গবেষণার চিন্তা ও পরিকল্পনা বিষয়ে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যামিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক, মাইকেল স্ট্রানো। তাদের উদ্দেশ্য এমন উদ্ভিদকে এমনভাবে বিশেষায়িত করা, যেটি টেবিল ল্যাম্প হিসেবে কাজ করবে। এমন একটি টেবিল ল্যাম্প যেটার কোন সংযোগ প্রয়োজন হবে না। আর এ আলো উৎপাদিত হবে উদ্ভিদের নিজস্ব রাসায়নিক রূপান্তর শক্তি থেকেই।
আলোক শক্তি উৎপাদনকারী এ ধরনের বিশেষ উদ্ভিদের নামকরণ করা হয়েছে, ন্যানোবায়োনিক প্ল্যান্ট। এর কার্যপদ্ধতি অনেকটা জোনাকির মতোই। জোনাকি পোকার প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে লুসিফেরাস নামক এনজাইম। উদ্ভিদের ক্ষেত্রেও লুসিফেরাস ও লুসিফেরিন নামক অনু ব্যবহার করে আলো বিচ্ছুরণ করতে সক্ষম করা হবে।
এভাবে সৃষ্টি করা আলোক উৎস প্রাথমিকভাবে ৪৫ মিনিট মৃদু আলো দিতে সক্ষম হয়ছিল। কিন্তু ইতোমধ্যে সময়সীমা ৪ ঘণ্টার কাছাকাছি আনাতে সক্ষম হয়েছেন এবং ধীরে ধীরে এ আলোর মাত্রা আরো বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন গবেষকগণ। শুধু তাই নয়, সমগ্র বিশ্বের ২০ শতাংশ শক্তি অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
প্রতিনিয়ত বিজ্ঞানের গতিশীলতা মানবসভ্যতাকে পৌঁছে দিচ্ছে উচ্চ থেকে উচ্চতর পর্যায়ে। নিত্য-নতুন আবিষ্কার বাস্তব করে তুলতে অনেক কল্পনাকে।