'বাংলাদেশে প্রতি ১০ জন শিশুর নয় জন তাদের বাবা- মা, শিক্ষক-শিক্ষিকা বা সেবাদানকারীদের দ্বারা শারীরিক বা মানসিক আগ্রাসনের শিকার হয়।'
Published : 24 Mar 2024, 04:04 PM
হোটেল, রেস্তোরা গণপরিবহনসহ বিভিন্ন জায়গায় শ্রমজীবী শিশুদের প্রায়ই বড়রা তাচ্ছিল্য করে ‘পিচ্চি’ বলে ডাকেন।
কিন্তু কেউ কি একবারও ভেবে দেখেছেন এই শব্দটি শিশুকে কতটা আহত করতে পারে?
হাফপোস্ট নামক এক জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত এক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, শিশুদের প্রতি অবজ্ঞাসূচক শব্দ বা বাক্যের প্রয়োগ তাদের জীবনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এই সমীক্ষাটি পরিচালনা করে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক চ্যারিটি সংস্থা ‘ওয়ার্ড মেটার্স’। সংস্থাটি শিশুদের ‘ভার্বাল এবিউজ’ থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে মানসিক ও শারীরিক বিকাশ নিশ্চিতে কাজ করে।
হাফপোস্টের সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুদের প্রতি অবজ্ঞাসূচক বাক্য প্রয়োগ করা শুধুমাত্র তাদের আত্মসম্মান, আত্মবিশ্বাস, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কিংবা কর্মক্ষমতাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, এর প্রভাবে শিশুদের মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যহত হয়।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল-ইউনিসেফ থেকে পাওয়া এক তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি ১০ জন শিশুর নয় জন তাদের বাবা- মা, শিক্ষক-শিক্ষিকা বা সেবাদানকারীদের দ্বারা শারীরিক বা মানসিক আগ্রাসনের শিকার হয়।
শিশুরা স্কুলে খারাপ ফলাফল করলে, কারো সঙ্গে ঝগড়া হলে, দুষ্টুমি করলে কিংবা পড়াশোনায় অমনোযোগী হলে বাবা-মা থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাই না বুঝিয়ে অনেক সময় অমানবিক আচরণ করেন যা তাকে হতাশাগ্রস্ত করে।
‘ওয়ার্ড মেটার্স’-এর সমীক্ষায় দেখা গেছে, শাসনের নামে অবজ্ঞাসূচক শব্দ বা বাক্য ব্যবহারের ফলে শিশুরা নিজেদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। তারা উদ্বিগ্ন বোধ করে, লজ্জিত হয়, একাকিত্বে ভোগে, বিব্রত বোধ করে,মানসিক অবসাদ তাদের পেয়ে বসে। এক সময় শিশুরা তাদের উপর ব্যবহার করা অবজ্ঞাসূচক কথাগুলোকে বিশ্বাস করতে শুরু করে। তারা নিজেরাও ভাবতে থাকে যে, সত্যি সত্যিই তাকে দিয়ে কিছু হবে না। কোনো কিছুতেই সে পারদর্শী হয়ে উঠতে পারে না।
এতে এক সময় কেউ কেউ আত্মহননের পথও বেছে নেয়। এভাবেই ক্ষতি হয় তার নিজের,পরিবারের ও সমাজের।
হাফপোস্টের সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,শিশুদের প্রতি অবজ্ঞাসূচক শব্দ বা বাক্য ব্যবহারের পরিবর্তে বিভিন্ন প্রেরণাদায়ী শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করলে, তা প্রতিটি শিশুকে তার সম্ভাবনার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দিতে পারে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: ঢাকা।