জলবায়ু পরিবর্তন: আমাদের দায় অনেক

ইউনিসেফ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের মধ্যে বাংলাদেশের শিশুরা রয়েছে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দাতিনাখালী গ্রামে একটি বেসরকারি সংস্থার বসানো গভীর নলকূপ থেকে খাবার পানি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন কয়েকজন নারী ও শিশু। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলীয় এ এলাকায় লবণাক্ততা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সুপেয় পানির সংকট। ফলে চার কিলোমিটারের বেশি পথ পায়ে হেঁটে স্থানীয় বাসিন্দাদের খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয়।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দাতিনাখালী গ্রামে একটি বেসরকারি সংস্থার বসানো গভীর নলকূপ থেকে খাবার পানি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন কয়েকজন নারী ও শিশু। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলীয় এ এলাকায় লবণাক্ততা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সুপেয় পানির সংকট। ফলে চার কিলোমিটারের বেশি পথ পায়ে হেঁটে স্থানীয় বাসিন্দাদের খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয়।

ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

পাঠ্যবই থেকে জেনেছি, কোনো নির্দিষ্ট স্থানের দীর্ঘ সময়ের, সাধারণত ৩০-৩৫ বছরের আবহাওয়ার বিভিন্ন অবস্থার গড়তাপমাত্রা হিসাবকে জলবায়ু বলে। আবহাওয়ার ওই গড় অবস্থা বদলে যাওয়া মানে হলো, জলবায়ু বদলে যাচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিপর্যয় এড়াতে হলে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির গতি কমিয়ে আনতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে, যেন ২১০০ সাল পর্যন্ত সময়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রাক শিল্পায়ন যুগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি না বাড়ে।

আমি মনে করি, জলবায়ু পরিবর্তনের বড় একটি কারন হচ্ছে অধিক পরিমাণে বৃক্ষ নিধন এবং নতুন নতুন শিল্প কারখানা প্রতিস্থাপন। এসব কারখানা থেকে প্রতিনিয়ত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ক্ষতিকর গ্যাস নির্গত হচ্ছে। যা পরিবেশ এবং জলবায়ুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ব্যক্তি পর্যায়ে ছোটখাটো অভ্যাসের পরিবর্তনের মাধ্যমেও কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখা সম্ভব। যেমন, উড়োজাহাজে চড়া কমিয়ে দেওয়া যায়, গাড়ি ব্যবহার কমিয়ে কিংবা বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহার করে, ঘরের কাজে জ্বালানি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়িয়ে, শীতের দেশে ঘর গরম করার কাজে গ্যাস নির্ভর হিটারের বদলে ইলেক্ট্রিক হিট পাম্প ব্যবহার করে ইত্যাদি।

জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের মধ্যে বাংলাদেশের শিশুরা রয়েছে। শিশুদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি প্রভাবের দিক দিয়ে বৈশ্বিক এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ১৫তম।

ইউনিসেফের ধারণা, বাংলাদেশে প্রতি তিনটি শিশুর মধ্যে একটি শিশু, প্রায় দুই কোটি শিশু, প্রতিদিন জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত বহন করে চলেছে। চরম আবহাওয়া, বন্যা, নদী ভাঙন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সংঘটিত অন্যান্য পরিবেশগত সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। এর ফলে অনেকের ঠাঁই হচ্ছে শহরের বস্তিগুলোতে, তাদের জীবন ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ছে। লাখ লাখ শিশু বঞ্চনামূলক শিশু শ্রম, শিশুবিবাহ পাচারের শিকার হচ্ছে।

আমি মনে করি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী আমরাই। তাই আগে আমাদের ভুলগুলো ঠিক করে নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বৃক্ষরোপন করতে হবে এবং শিল্প কারখানার বিষাক্ত ও ক্ষতিকর গ্যাস বন্ধ করতে হবে।

প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: সিলেট।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com