নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। বাঙালি জাতির গৌরবের সেই দিনটির ৫১তম বার্ষিকী পালন হচ্ছে শুক্রবার।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন শেষ হওয়ার পরই শুরু হয় পাকিস্তানি শাসনের খড়গ। দুই যুগ ধরে তাদের বৈষম্য আর বর্বরতার শিকার বাঙালি জাতি ক্রমেই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। স্বাধীনতাকামী বাঙালিকে শেকল ভাঙার মন্ত্র শেখানো শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে ওঠেন বাংলার মানুষের ভালোবাসার বঙ্গবন্ধু।
বাঙালির অধিকার ফিরিয়ে দিতে তিনি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। জেল-জুলুম দিয়েও তাকে পিছু হটানো যায়নি। বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে তিনি কেবল সামনেই পা বাড়িয়েছেন। বাংলাদেশ নামে একটি পরিচয় তৈরি করতে চেয়েছেন।
১৯৭১ সালের ২রা মার্চ বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সেদিন পতাকা বহন করে বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দেন তারই নিকটতম ছাত্রকর্মী মহিব উল ইসলাম ইদু।
হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এক সাক্ষাৎকারে মহিব উল ইসলাম ইদু জানান, স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর উপর সাধারণ মানুষের চাপ ক্রমেই জোড়ালো হচ্ছিল।
৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) হাজির হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সরাসরি ডাক দেন প্রতিরোধ ঘাঁটি গড়ে তোলার। যার যা কিছু আছে তা নিয়েই প্রস্তুত থাকতে বলেন তিনি।
২৫ মার্চ কালরাতে নিরীহ, ঘুমন্ত বাঙালির উপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সশস্ত্র আক্রমণ শুরু হয়। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে আটকের আগেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে ‘স্বাধীন’ ঘোষণা করে দেশবাসীর উদ্দেশে একটি তারবার্তা পাঠান। ইপিআরের ওয়ারলেস বার্তায় প্রচার করা হয় তার স্বাধীনতার ঘোষণা।
পরে চট্টগ্রামের স্থানীয় একটি বেতারকেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ মার্চ বেশ কয়েকজন শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক পৌঁছে যায় বাঙালির কানে কানে। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। তা সফল পরিণতি পায় নয় মাস পর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে।
১৬ ডিসেম্বর ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ করেন যুদ্ধে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেওয়া লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমীর আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী।
দখলদার পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাঙালির বিজয়ের গল্প রচিত হয়।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: ঢাকা।