বয়ঃসন্ধির সময়ে আমরা যে সব সমস্যায় পড়ি তা আমাদের পাঠ্যবইয়েও দেয়া আছে। কিন্তু শিক্ষক তা আমাদের সাথে খোলাখুলি আলোচনা করেন না। বাসায় পড়ে নিতে বলেন। তিনি হয়ত লজ্জা পান। তাই আমরা সে সব সমস্যার কথা চেপে যাই।
Published : 18 Mar 2015, 12:13 PM
বন্ধুরাও এসব শুনলে ঠাট্টা করে, সবক্ষেত্রে বাবা-মাও এগুলো নিয়ে সন্তানের সাথে আলোচনা করেন না। একটা নিষিদ্ধ কোন অপরাধ গোপন করে বেড়ানোর মত সময় পার করি আমরা।
আমার বন্ধু একদিন গল্প করতে গিয়ে আমাকে তার সমস্যার কথা বলে। এমন কি যখন তার মুখে লোম গজাতে শুরু করল, সে বাইরে যেতে লজ্জা পেত। মাঝে মাঝে ঘুমের ভেতর ‘স্বপ্নদোষ’ বলে যে ঘটনাটি আমাদের পার করতে হয়, সেটা নিয়ে সে এতটাই লজ্জিত ছিল, ভাবত সে কোন পাপ করেছে। তার পরিবারের লোক মনে করেন, বড়দের সাথে এসব আলোচনা করা উচিৎ নয়। তা যদি কেউ করে তবে তাকে অভদ্রতা মনে করেন। কিন্তু তারা ভাবেন না, তারা আপনজন হয়েও যদি সন্তান বা ভাইকে দূরে সরিয়ে রাখেন তবে সে কোথায় এর সমাধান খুঁজবে?
আমার সৌভাগ্য যে, আমার পরিবার এ ব্যাপারে সচেতন। আমার সাথে তারা যাবতীয় শারীরিক-মানসিক বদলের উপসর্গগুলো আগেই আলোচনা করেছিলেন। আমি তাই আমার বন্ধুর সাথে সেগুলো আলাপ করে তাকে সাহায্য করতে পারলাম।
আমার অভিভাবকরা মনে করেন, বাবা-মাকেই তার সন্তানের সাথে সব কথা খোলাখুলি আলাপ করা উচিৎ। না হলে শিশুরা এসব গোপন করতে করতে অন্য অনেক অপরাধের সাথে জড়িয়ে যায়। অনেকে নানারকম মানসিক সমস্যাতেও ভুগতে থাকে। লেখাপড়ার দিকে মন দিতে পারে না।
আমি নিজে একজন সৌভাগ্যবান কিশোর। আর তাই আমি বলতে চাই, এই বিষয়টকে তুচ্ছ মনে না করে যে যেভাবে পারেন, কিশোর বয়সীদের বন্ধু করে নিন। তাদের সাথে কথা বলে জড়তা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করুন। নতুবা তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে।
আমি মনে করি আমাদের মা বাবা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, বড় ভাই-বোন, বন্ধু সবার দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন করতে হবে। আর তাহলেই বেড়ে উঠতে গিয়ে আমাদের আর পথ ভুল হবে না।