
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এক সাক্ষাৎকারে জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দু’ভাবেই মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পুষ্টিহীনতার মুখে পড়বে।
“এতে শিশুরা যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নাই। গর্ভের শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের বিষয়ে বলাই বাহুল্য।”
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “যেহেতু পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাবে, তখন বিশুদ্ধ পানির অভাব পড়বে- এতে সংক্রামক ব্যাধি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশুদ্ধ পানি না হলেই পেটের পীড়ায় ভুগবে। খাদ্যবাহিত রোগ আসবে।
“তাপমাত্রা বাড়লে মশাবাহিত ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া বেড়ে যাবে। বৃষ্টির সময়ে ঠাণ্ডা বা ঠাণ্ডার সময়ে বৃষ্টি হলে হাঁচি-কাশির মাধ্যমে যে রোগগুলো ছড়ায় সেগুলো ছড়াবে। মলমূত্র, স্পর্শের মাধ্যমে রোগবালাই ছড়াবে।”
অর্থাৎ আমরা বুঝতেই পারছি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কীভাবে আসবে আমাদের উপর। নারী ও শিশুরা যে বেশি ভুক্তভোগী হবে তা সহজেয় অনুমেয়। শিশুশ্রম, বাল্যবিয়ে সবকিছুই হয়ত বেড়ে যাবে।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ ২০১৯ সালের এপ্রিলে এক প্রতিবেদনে জানায়, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভাঙন, খরাসহ অন্যান্য পরিবেশগত বিপর্যয় বাংলাদেশে এক কোটি ৯০ লাখের বেশি শিশুর জীবন ও ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ফেলছে।
ইউনিসেফের আশঙ্কা, বিশ্বজুড়ে শিশুদের উন্নয়নে বিভিন্ন দেশের যে অর্জন গত কয়েক দশকে হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তা ম্লান হয়ে যেতে পারে।
আমি যতটুকু পড়েছি, আফ্রিকা থেকে মানবজাতির ইতিহাস পাওয়া যায়। মানুষের ফসিল সংগ্রহ করে বিজ্ঞানীদের গবেষণা এটাই সামনে আনে। লাখ লাখ বছরে মানুষ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এক স্থানে জলবায়ু পরিবর্তন বা বিরুপ প্রকৃতি দেখলে মানুষ সেখান থেকে অন্যত্র গিয়ে বাস করত। এক মহাদেশে কয়েকশো বছর বাস করলে আবার নতুন মহাদেশে পাড়ি জমাত।
কিন্তু আমাদের এখন আর জায়গা বদলের সুযোগ নেই। এই পৃথিবীকেই বাসযোগ্য করতে হবে। প্রকৃতিকে লালন করতে হবে মানবজাতির স্বার্থেই।