নজরুল জয়ন্তী

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী মঙ্গলবার। যিনি সারাজীবন বলে গেছেন মানবতার কথা আর উপড়ে ফেলে দিতে চেয়েছেন সাম্প্রদায়িকতার বিষ দাঁত।
নজরুল জয়ন্তী

বিদ্রোহী কবি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জৈষ্ঠ্য জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছেলেবেলায় পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন ‘দুখু মিয়া’ নামে। 

শৈশবে পিতৃহারা নজরুলের প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি হয় গ্রামের মক্তবে। ছোটবেলায় যোগদেন লেটো গানের দলে। ১৯১০ সালে লেটো গানের দল ছেড়ে দিয়ে প্রথমে রানীগঞ্জ সিয়ারসোল স্কুল এবং পরে মাথরুন স্কুলে (নবীনচন্দ্র ইন্সটিটিউশন) ভর্তি হলেও আর্থিক অনটনের কারণে আবারও আসানসোলে চা-রুটির দোকানে কাজ নিতে হয় নজরুলকে। পরে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার দরিরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। প্রবেশিকা শেষ না করেই ১৯১৭ সালে তিনি সেনাবাহিনীর বাঙালি পল্টনে যোগ দিতে করাচি যান। ১৯২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় আড়াই বছর চলে তার সেই সামরিক জীবন। সেখানেই তার সাহিত্য জীবনের সূচনা ঘটে।

১৯২২ সালে প্রকাশিত হয় নজরুলের বিখ্যাত কবিতা 'বিদ্রোহী'। ব্রিটিশবিরোধী লেখার জন্য তাকে কারারুদ্ধ হতে হয় বেশ কয়েকবার। 

নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। 

তার রচিত কাব্যগুলোর মধ্যে অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি, ছায়ানট, প্রলয়শিখা, চক্রবাক, সিন্ধুহিন্দোল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ব্যাথার দান, রিক্তের বেদন, শিউলিমালা, মৃত্যুক্ষুধা, কুহেলিকা ইত্যাদি তার রচিত গল্প ও উপন্যাস। যুগবাণী, দুর্দিনের যাত্রী ও রাজবন্দির জবানবন্দী তার উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থ। 

১৯২১ সালে কুমিল্লায় প্রমীলা দেবীর সঙ্গে পরিচয়ের তিন বছর পর পরিণয় হয়। কবি পরিবারে আসেন কাজী সব্যসাচী ও কাজী অনিরুদ্ধ।

মাত্র ৪৩ বছর বয়সে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্রমশ বাকশক্তি হারান কাজী নজরুল। স্বাধীনতার পরপরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসুস্থ কবিকে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন এবং নাগরিকত্ব প্রদান করেন। পরে তাকে বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদায় ভূষিত করা হয়।

১৯৭৬ সালের ২৯ অগাস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com