নবজাতকের যত্ন নিতে হবে

গত ১০ জুন রাতে আমার একমাত্র বড় বোনের ছেলে শিশু হয়েছে। আমি মামা হয়েছি। আমি আমার ভাগ্নের ব্যাপারে খুবই স্ট্রিক্ট ছিলাম। এ সময়েই আমি নবজাতকের যত্ন সম্পর্কে জেনেছি।
নবজাতকের যত্ন নিতে হবে

আগে অনেক প্রসূতি মা ও নবজাতক মারা যেতো। মৃত্যুর হার ছিল আঁতকে ওঠার মতো। আস্তে আস্তে বাংলাদেশে আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা প্রচলিত হতে থাকলে নবজাতক ও প্রসূতি মায়ের মৃত্যুহার কমে আসতে থাকে।

সেসময় প্রসূতি মা ও নবজাতক মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজব্যবস্থা। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি শিশু জন্মের পর চার সপ্তাহ পর্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে থাকে। এসময় নবজাতকের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই কোনোমতেই যেন ঠাণ্ডা না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

নবজাতকের হাতে ও পায়ে মোজা পরিয়ে রাখতে হবে। মাথায় টুপি পরাতে হবে। মনে রাখতে হবে, নবজাতকের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ও প্রাপ্তবয়স্কদের স্বাভাবিক তাপমাত্রা এক নয়। 

মায়ের দুধের কোনো বিকল্প নেই। বাজারে শিশুদের জন্য যে গুঁড়ো দুধ পাওয়া যায় তা অনেকক্ষেত্রেই অনিরাপদ। মায়ের শরীরে অল্প দুগ্ধ উৎপাদন হলেও গুঁড়ো দুধ খাওয়ানো উচিত নয়। মায়ের দুধ অল্প হলেও সেটা পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

নবজাতকের স্বাভাবিক ওজন আড়াই কেজি।

আমার ভাগ্নের ওজন ছিল তিন কেজির মতো। অনেকে ভেবেছিল বাচ্চার ওজন হয়তো স্বাভাবিকের চেয়ে কম। কিন্তু আমি তাদের আশ্বস্ত করেছিলাম, বাচ্চার ওজন ঠিক আছে।

নবজাতককে জন্মের তিনদিনের আগে গোসল করানো একদমই ঠিক না। নবজাতকের দেহে তরল জিনিস ব্যবহারেও বেশ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। আমার ভাগ্নের নাভিতে 'তেল জাতীয়' জিনিস দেওয়ার ফলে ছোট খাটো ইনফেকশন হয়ে গিয়েছিল। সময়মতো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

নবজাতকের মুখে চিনি বা মধু দেওয়া একেবারেই অনুচিত, যা একধরণের কুসংস্কার। জন্মের প্রথম ছয়মাস একটি শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। মাকে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। কারণ মা পুষ্টিকর খাবার খেলে পুষ্টিকর দুগ্ধ উৎপাদন হবে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে নবজাতককে কোলে নিতে হবে। বিশেষ করে, দুই হাত হ্যান্ডওয়াশ বা সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। সবার কোলে নবজাতককে দেওয়া ঠিক নয়। এতে তার জীবাণু নবজাতকের দেহে পার হয়ে যেতে পারে।

ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো কাজ করা উচিত নয়। নাহলে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com