দ্বিজেন শর্মার বাবা ভিষেক চন্দ্রকাণ্ড শর্মা ছিলেন গ্রাম্য কবিরাজ, আর মা মগ্নময়ী দেবী ছিলেন সমাজসেবী।
ছোটবেলা থেকেই দ্বিজেন প্রকৃতিকে ভালোবাসতেন। প্রকৃতির প্রতি ছিল তার অকৃত্রিম প্রেম।
গ্রামের পাঠশালাতে দ্বিজেন শর্মার পড়াশোনার হাতেখড়ি হয়। করিমগঞ্জ পাবলিক হাইস্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। তারপর কলকাতা সিটি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
মায়ের ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হবেন, কিন্তু প্রকৃতিপ্রেম তাকে প্রকৃতিবিদ হতে আকৃষ্ট করে। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি উদ্ভিদবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
শিক্ষকতা দিয়ে দ্বিজেন শর্মার কর্মজীবন শুরু হয়। তিনি ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে বরিশাল ব্রজমোহন কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। চারবছর সেখানে শিক্ষকতা করে ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে নটরডেম কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন।
সোভিয়েত প্রকাশনা সংস্থা 'প্রগতি প্রকাশনে' অনুবাদকের চাকরি পেলে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি মস্কো চলে যান। সেখানে তিনি প্রায় ১৭ বছর কাটানোর পর ১৯৯১ সালে দেশে ফিরে আসেন।
১৯৬০ সালে বরিশালে দেবী চক্রবর্তীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ড. দেবী শর্মা ঢাকা সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজে দর্শনের অধ্যাপক ছিলেন।
দ্বিজেন শর্মার এক ছেলে আর এক মেয়ে। ছেলে সুমিত শর্মা মস্কোতে আর মেয়ে শ্রেয়সী শর্মা বাংলাদেশে থাকেন।
প্রকৃতি প্রেমের ব্রতী হয়ে তিনি প্রকৃতি-বিজ্ঞান নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। তারমধ্যে কয়েকটি শিশুতোষ বইও আছে।
ড. কুদরত-এ খুদা স্বর্ণপদক, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদকসহ তিনি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মননায় ভূষিত হন।
খ্যাতনামা এই প্রকৃতিবিদ ২০১৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ৮৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। প্রকৃতির মাঝে তিনি বেঁচে থাকবেন আজীবন।