কবি গেয়েছেন সাম্যের গান!

কবি গেয়েছেন সাম্যের গান!

আমার কয়েকজন প্রিয় ব্যক্তির মধ্যে একজন কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলাদেশের জাতীয় কবি। প্রেম ও দ্রোহের কবি আবার তিনিই সাম্য ও মানবতার কবি।

১৮৯৯ সালের ২৫ মে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় দুখু মিয়া নামে পরিচিত ছিলেন। কাজ করেছেন লেটো গানের দলে ও রুটির দোকানে। ইমামতিও করেছেন মসজিদে। আবার সেনাবাহিনীতে সৈনিকও ছিলেন। ছিলেন সাংবাদিকতার সাথেও জড়িত।

চরম দরিদ্রতার সাথে লড়াই করেছেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। সময়ে জেগে উঠেছেন। ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে কখনো ব্রিটিশদের কাছে মাথা নত করেননি।

পড়াশোনায় তিনি মাধ্যমিকও পাশ করেননি কিন্তু বর্তমানে তার রচনা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্য। এটাই অনুপ্রেরণা।

তার লিখে যাওয়া গল্প, কবিতা, উপন্যাস, গান, প্রবন্ধ সবকিছু এখনো চিরসজীব। তরুণপ্রাণের জন্য অনুপ্রেরণা।

'রমজানেরই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ' এই গানটা ছাড়া ঈদ আমি কল্পনা করতে পারি না। আবার তার যে গানটি আমার সবসময় কানে বাজে- 'আলগা করো গো খোঁপার বাঁধন, দিল ওহি মেরা ফাঁস গায়ি।'

'বিদ্রোহী' কিংবা 'প্রলয়োল্লাস' অথবা সাম্যবাদী, 'কুলি-মজুর' বা অন্যান্য কবিতার কথা নাই বা বললাম।

কী অসাধারণ কথা বলেছেন তিনি, তার 'প্রলয়োল্লাস' কবিতায়- 'ভেঙে আবার গড়তে জানে সে চিরসুন্দর।'

আবার 'বিদ্রোহী' তে কবি বলেন- 'মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাশরী আর হাতে রণতূর্য।' প্রেম আর দ্রোহ একই সাথে বন্দী করেছেন তিনি।

'মিথ্যা শুনিনি ভাই' এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দীর-কাবা নাই।' এমন চরণ রচনা একমাত্র বিদ্রোহী কবিকে দ্বারা সম্ভব।

তার প্রবন্ধ- 'রাজবন্ধীর জবানবন্দী' যা পড়ামাত্র মনে তেজ আসে।

অন্যায় আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সবসময় জ্বলে উঠেছেন তিনি। শোষিত নিপীড়িত মানুষের পাশে ছিলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছিল তার সংগ্রাম। তিনি ছিলেন অনড়। 

তার গান- 'কারার ঐ লোহ-কপাট;

             ভেঙে ফেল, কর রে লোপাট'

এবং রণ সংগীত 'চল চল চল' সবসময় সকল আন্দোলনে অনুপ্রেরণা দিয়ে যায়।

কবি ২৯ অগাস্ট ১৯৭৬ সালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গনে তার সমাধিস্থল।

Related Stories

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com