জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি কবি

“শাদা রাস্তা চলে গেছে বুকের মধ্যে পাতার সবুজ সম্মিলিত কাঁচা শব্দে সে তোমাকে ডেকেছিল 'রাধা'; আধখানা তার ভাঙ্গাগলা, আধখানা তার সাধা।”
জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি কবি

রাজনৈতিক হোক বা প্রেমের কবিতা; কবি শহীদ কাদরী এভাবেই তার নিজস্ব ধরণে রচনা করেছেন অনন্য কিছু সৃষ্টিকর্ম। সৃষ্টিশীলতার জগতে শহীদ কাদরীর মূল বৈশিষ্ট্য হলো সাহিত্যকর্মে তার নিজস্বতা।

মাত্র চারটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করে কবি হিসেবে বাংলাদেশে রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। ষাটের দশকের অন্যতম প্রধান এই কবি জন্মগ্রহণ করেছেন ১৯৪২ সালে ১৪ অগাস্ট।

প্রেম, রাজনৈতিক পরিস্থিতি- এসকল বিষয় ছিল শহীদ কাদরীর লেখার মূল উপজীব্য। তবে এ জটিল বিষয়বস্তুকেই অসাধারণ শব্দ চয়নের মাধ্যমে উপস্থাপন করে তিনি বাংলা কবিতায় নাগরিকতা ও আধুনিকতাবোধের সূচনা করেছিলেন। যেহেতু কবির শৈশব ও কৈশোরের প্রায় পুরো সময়টাই কেটেছে শহরে, তাই তার কবিতায় মূলত শহুরে জীবনযাত্রার ছবি ফুটে উঠেছে।

নিজস্ব বোধকে রূপক প্রতীকের সাহায্যে কবিতায় তুলে ধরে তিনি নিজেকে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম একজন কবি হিসেবে দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছেন। একারণে একসময় তার কাব্যচর্চায় দীর্ঘ ছেদ পড়লেও বাংলার পাঠকের কাছে তার জনপ্রিয়তা এতটুকুও কমেনি।

কবির প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ১৯৫৬ সালে। ১৯৬৭ সালে পঁচিশ বছর বয়সে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'উত্তরাধিকার' প্রকাশিত হয় । দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'তোমাকে অভিবাদন, প্রিয়তমা' প্রকাশিত হয় ১৯৭৪ সালে। এর ঠিক চার বছর পর প্রকাশিত হয় তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ 'কোথাও কোন ক্রন্দন নেই।' দীর্ঘ বিরতির পর ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয় তার শেষ কাব্যগ্রন্থ 'আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও।' 

১৯৭৮ সালে শহীদ কাদরী চলে যান জার্মানিতে। সেখানে কিছুদিন থাকার পর চলে যান লন্ডনে। এভাবে প্রায় চার বছর ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘোরার পর ফিরে আসেন বাংলাদেশে। বাংলাদেশে এসে যোগ দেন দৈনিক সংবাদ পত্রিকায়। কিন্তু এখানে বেশিদিন থাকতে পারেননি। ১৯৮২ সালে তিনি আবার ফিরে যান লন্ডনে। এরপর ২০০৪ সাল থেকে আমৃত্যু তিনি আমেরিকায় জীবন যাপন করেছেন। 

ব্যক্তিজীবনে তার সহধর্মিণী ছিলেন নীরা কাদরী। কবিতায় অসামান্য অবদানের জন্য কবি শহীদ কাদরী ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমী ও ২০১১ সালে একুশে পদক লাভ করেন।

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান এই কবি ২০১৬ সালের ২৮ অগাস্ট নিউইয়র্কে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার জন্মদিনে রইল অজস্র শ্রদ্ধা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com