বলতে গেলে খেলা বা বিনোদনের তেমন কোনো ব্যবস্থাই নেই পাহাড়ী গ্রামের শিশুদের। তাদের বিনোদন বলতে গ্রামের চায়ের দোকানের কয়েকটি টেলিভিশনই ভরসা। তবে অধিকাংশ গ্রামেই টেলিভিশন এবং বিদ্যুৎ নাই।
তবে ব্যতিক্রম আছে কোথাও কোথাও। যেমন, বড়ুইতলি পাড়া। বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নে এ গ্রামের সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও গড়ে উঠেনি। সাঙ্গু নদীপথেই গ্রামের মানুষের যাতায়াত। বড়ইতলী গ্রামের লোকসংখ্যা কমবেশি আড়াইশ। বসতবাড়ি ৪৬টি। চায়ের দোকানসহ কয়েকজনের বড়িতে থাকা মোট সাতটি টেলিভিশন। তিনটি দোকান ছাড়া স্যাটেলাইট সংযোগও নাই।
শিশু শৈমং খুমি নামের কিশোরের কাছে জানা যায়, তার এলাকায় খেলাধুলার কোনো ব্যবস্থা নেই। টেলিভিশন দেখেই আনন্দ পায়। টিভি দেখার জন্য এখানে ওখানে দৌড়ায়।
তার পছন্দ কার্টুন ছবি। যদিও সে নিজের মতো করে কিছুই দেখতে পায় না। প্রাথমিকের ছাত্র উশৈ সাই মারমাও কার্টুন পছন্দ করে। তবে কার্টুন দেখা হয় না বললেই চলে। নদীর চরে ঘোরাঘুরি করেই সময় কাটায়।
চিংসা মং মার্মার চায়ের দোকান আছে। চা বেচেই তার সংসার চলে। তার দোকানে ডিস কেবল থাকায় গ্রামের ছোটবড় সবাই টিভি দেখতে ভিড় জমায়। টিভি দেখার সুবাদে দোকানে বেচা-বিক্রিও একটু বেশি হয়।
শিশুদের আরেকটু আনন্দ যোগ হয় গ্রামে যখন খেলনার ফেরিওয়ালা আসেন। ফেরিওয়ালা সৈয়দ আলমের কাছে শিশুরা বাঁশি, বেলুন কেনে। যারা কিনতে পারে না, তারাও চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে সৈয়দ আলমকে।
গ্রামের বাসিন্দার শৈ হ্লা চিং মার্মা (৩৯) পেশায় কৃষক। নিজের টেলিভিশন নাই। কাজ শেষে বাড়ির পাশে চায়ের দোকানে টেলিভিশন দেখেন। এটিই তার একমাত্র বিনোদন। তার পছন্দ, ভারতীয় বাংলা নাটক।