বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট, বঙ্গবন্ধু-১

অদূর ভবিষ্যতে মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপনকারী দেশের তালিকায় ৫৭তম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে বাংলাদেশ। যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি বড় সফলতা।
বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট, বঙ্গবন্ধু-১

বর্তমান বিশ্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ বেশ এগিয়ে। আর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখা সামনে রেখে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়কে পাঠ্যক্রমে আবশ্যিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থেকে শুরু করে, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতাসহ নেওয়া হচ্ছে নানা রকম উদ্যোগ। এই অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্তিম উপগ্রহ, বঙ্গবন্ধু-১।

এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মূল দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশের পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় পরিকল্পনা, গবেষণা, উৎক্ষেপণ ও অন্যান্য কাজ সমন্বিতভাবে করেছে, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন কেন্দ্র (স্পারসো), স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল (এসপিআই), স্পেসএক্সসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রজেক্ট ও প্রোগ্রাম অংশে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্প’ শিরোনামে প্রতিবেদন আকারে এ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেছে। বিটিআরসি-র তথ্য অনুসারে এপ্রিল, ২০০৮-এ প্রাথমিক এবং ২০১০ সালে পুনরায় এ প্রকল্প সম্পর্কিত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরপর ২০১২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প প্রণয়ন এবং বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়। ১৫ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে রাশিয়ার উপগ্রহ কোম্পানি ‘ইন্টারস্পুটনিক’র কাছ থেকে চুক্তির মাধ্যমে  ১৫ বছরের জন্য ১১৯.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা কক্ষপথ কেনা হয়েছিল। 

আমেরিকার ফ্লোরিডা থেকে এটি উৎক্ষেপণ করা হবে। কিন্তু সরাসরি পরিচালনা করা হবে বাংলাদেশের গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে। যা স্থাপিত হচ্ছে বাংলাদেশের গাজীপুর ও বেতবুনিয়ায়। তবে একটি থাকবে প্রধান এবং অপরটি ব্যাকআপ হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২৯ মার্চ থালেস অ্যালেনিয়া স্পেসের মানুফ্যাকচার কার্যক্রম শেষে স্যাটেলাইটটি আমেরিকার স্পেসএক্স-এ পৌঁছায়। এরপর ৩১ মার্চ ফ্লোরিডার ‘কেপ ক্যানাভেরাল’-এ শুরু হয় উৎক্ষেপণের পূর্বকালীন পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য পূর্বে বেশ কিছু তারিখ ঘোষণা করা হলেও আবহাওয়া ও বিভিন্ন জটিলতায় সেটি স্থগিত রয়েছে। তবে এপ্রিল মাসের শেষ বা কাছাকাছি সময়ে উৎক্ষেপণের সম্ভাবনার রয়েছে। এ উদ্দেশ্যে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের নেতৃত্বে ২২ সদস্যের একটি দল ফ্লোরিডা যাবার কথাও বলা হয়েছে।

স্যাটেলাইটের মূল ভূমিকা, যোগাযোগ ক্ষেত্রে উন্নতি হলেও পরিবর্তন আনবে আরও অনেক ক্ষেত্রে। যেমন, ই-কমার্স, ই-লার্নিং, টেলিকমিউনিকেশন, বেতার, আবহাওয়া বার্তা প্রভৃতি। এছাড়া টিভি চ্যানেলের জন্য স্যাটেলাইট সংযোগের ক্ষেত্রে অন্য দেশের উপর নির্ভর করতে হবে না। যার ফলে ব্যয় হ্রাস পেয়ে অর্থনীতিতেও অনেক প্রভাব রাখতে সক্ষম হবে। এমনকি দেশের ক্রান্তীয় এলাকা পর্যন্ত দুর্যোগকালীন সময়েও অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থাও নিশ্চিত হবে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com